বিধানসভা ভোটের ঠিক আগেই তৃণমূল ছেড়ে দলে দলে বিজেপি-তে যাওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল বিভিন্ন নেতা, মন্ত্রী, তারকাদের। কিন্তু নবান্নের লড়াইয়ে তাঁদের বেশিরভাগকেই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। তবে বিধানসভা ভোটে বিপুল সাফল্য পাওয়ার পরও দলবদলুদের প্রতি উদার আহ্বান জানালে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদি কেউ ফিরতে চায় তাহলে দলে স্বাগত জানাবেন বলে জানান তিনি।
২রা মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিরিখে তৃণমূলের ধারেকাছেও নেই বিজেপি। তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন যে সমস্ত হেভী ওয়েট নেতারা, তাঁদের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী, নিশীথ প্রামাণিক এবং হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে বাদ দিলে কেউই জয়লাভ করেননি। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, বৈশালী ডালমিয়াদের মানুষ খালি হাতেই ফিরিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে বিজেপি-র হারের পর থেকেই তাই এই সমস্ত পরাজিত দলবদলু নেতাদের তৃণমূলে ফিরে আসা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। ৩রা মে সকালে কালীঘাটে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা, সেখানে এই সমস্ত পূর্ব তৃণমূল নেতা নেত্রীর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মমতার উত্তর, ‘‘আসুক না। কে বারণ করেছে! এলে স্বাগত।’’
ভোটের ফলাফল প্রকাশের এখনও অবধি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া কেউই প্রকাশ্যে তৃণমূলে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। কিন্তু ফিরে আসার সম্ভাবনা একেবারেই ফেলেও দেওয়া যাচ্ছে না। এই সম্ভবনা নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ত্যাগ করে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা অত্যাচারিত এবং অপমানিত হয়ে এসেছিলেন। মনে হয় না তাঁদের কেউ ফিরে যেতে চাইবেন।’’
তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশের মতে, ভোটের প্রচারে যাঁদের ক্রমাগত ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘গদ্দার’ ‘আপদ’ ইত্যাদি বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী, তাঁদের আদৌ কতটা স্বাগত জানাবেন সন্দেহ রয়েছে। বিশেষ করে তাদের ছাড়া এতবড় জয়লাভের পর। হয়তো এমনই রাজনৈতিক সৌজন্যের থেকেই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।