ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর নাকি ভেঙে পড়েছেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতার হওয়ার পর তার মুখে নাকি বারংবার একটাই কথা, সব শেষ হয়ে গেল! তাঁর যাবতীয় মানসম্মান (Reputation) সবটাই নষ্ট হয়ে গেল। শনিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পর ইডির একটি সূত্রে নাকি তেমনই দাবি করা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে বাংলা সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা। অবশ্য তৃণমূল মহাসচিবের এই বক্তব্যের কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন সংস্থা সূত্রে জানা যায়নি। ইডির যে সূত্রে ওই খবর বলে জানা গিয়েছে তারা নাকি আরো বলেছেন যে গ্রেফতার হওয়ার সময় পর্যন্ত পার্থ চ্যাটার্জির ভেতরে সেইভাবে আর কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না। কিন্তু দুর্নীতির মুখ হিসাবে অভিযুক্ত হওয়ার পর মানসিক ভাবে বিপর্যন্ত নাকি তিনি। বারবার বলছেন সব সন্মান শেষ হয়ে গেল।
গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সকাল বেলাই এসএসসি দুর্নীতি ঘিরে তদন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়-এর নাকতলার বাড়়িতে ঢুকেছিল ইডি। শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত তারা সেই বাড়িতেই ছিলেন। সমস্ত নথি পত্র খুঁটিয়ে দেখেছেন তারা। সাথে সাথে চলেছে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। হয়তো জিজ্ঞাসাবাদ করে বেরিয়েই আসতেন তারা কিন্তু আচমকাই তাদের চোখে পড়ে কিছু দলিল। যে সূত্র ধরে তারা পৌঁছন পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বাড়ি। তার পরেই অর্পিতার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাতে হানা দেয় ইডি। সেখানে তল্লাশি চালাতেই বেরিয়ে আসে কোটি কোটি টাকার হদিশ। সেই অগুনতি পরিমাণ টাকার উৎস খুঁজতে অর্পিতাকে জেরা করতে শুরু করেন তদন্তকারীরা।
অপরদিকে তখনও নাকতলায় পার্থ চ্যাটার্জির বাড়িতে রয়ে গিয়েছেন ইডি-র কয়েক জন আধিকারিক। রাতভর তাঁরা পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বাড়িতে থেকেই সেখান থেকে উদ্ধার করা যাবতীয় নথি পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে দেখছিলেন। জেরা চলছিল পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কেও। মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় সেকেন্ড ইন কমান্ড হচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এর আগে তিনি রাজ্য সরকারের হয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বও সামলিয়েছিলেন।
রাতভর জেরা করার পর শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ টানা প্রায় ২৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পার্থকে গ্রেফতার করা হয়। বলা হয় তিনি তদন্তে ‘সহযোগিতা’ করছিলেন না। পার্থ চট্টপাধ্যায়কে ইডির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এক অভ্যন্তরীণ সূত্রে খবর (আনন্দবাজার পত্রিকা সূত্রে, সত্যতা যাচাই করেনি দৈনিক সংবাদ) এটা শোনার পর সকলের সামনেই নাকি ভেঙে পড়েন রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী। বারবার বলতে থাকেন, তাঁর মানসম্মান সবটাই চলে গেল।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে চলা এই তদন্ত শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ২০১৬ সালে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে দুর্নীতির সূত্রপাত। যেখানে পরীক্ষার উত্তরপত্র হিসেবে ব্যবহৃত ওএমআর শিট জাল করে কারসাজি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এই শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় লাখ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে অকৃতকার্য প্রার্থীদের পাস করানো হয়। এ ঘটনায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত ছিল বলে বলে সূত্রে খবর যাদের উপর তদন্ত চলছে।