Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং

করোনায় বন্ধ হওয়ার মুখে স্কুল, উপায় না পেয়ে চপ ভেজে স্কুলকে বাঁচানোয় ব্রতী প্রধান শিক্ষক

ঝাড়গ্রাম শহরের তিমির মল্লিক এক বেসরকারি নার্সারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে ঠেকে গিয়েছিল। স্কুলের ফি মেটাতে পারেননি অনেক ছাত্র ছাত্রীর পরিবার। তাই তিমির বাবু স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও অন্যান্য কর্মচারীদের বেতন মেটাবেন কিভাবে সেই নিয়ে চিন্তায় পরে যান। কোনও লাভও হয়নি ভার্চুয়াল ক্লাস চালু করে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অনেকেই নিম্নবিত্ত পরিবারের আর সেজন্যই স্মার্টফোন কিনে পড়াশুনো করার ক্ষমতাও নেই। উল্টে শিক্ষিকাদের মোবাইলে রিচার্জ করে দিতে হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনলাইন ক্লাসের জন্য। বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর বছর তিপান্নর তিমির উপায় না পেয়ে চপ আর মিষ্টির দোকান দেন। ভালই চলছে দোকান গত দেড় বছর। নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন ১৫ জন শিক্ষিকা ও ৬ জন শিক্ষাকর্মী লাভের টাকায়।

এই বেসরকারি স্কুলের দু’টি শাখা ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত। একটি ইংরেজি, অন্যটি বাংলা মাধ্যম। প্রি-নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া ছিল সাড়ে সাতশো করোনার আগে। বাদ সাধল অতিমারি ২০২০ সালের গোড়ায়। স্কুলছুট বাড়তে থাকল। তিমির বলছিলেন, ‘‘যা মূলধন ছিল তাতে শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন বড়জোর দু’মাস মেটানো যেত। চপ-মিষ্টির দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিই পরে কী হবে ভেবেই ।’’ তিন কাঠা জমি ছিল শহরের উপকণ্ঠে ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঁধগোড়া পঞ্চায়েতের পুরুষোত্তমপুরে তিমিরের । সেখানে শুরু হয় দোকান ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে। ‘স্পার্ক ২০২০’ দোকানের নাম। তিমির বলছেন, ‘‘এই নাম দিয়েছি করোনাকালে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রমাণ হিসেবেই । শুধু চপশিল্প কেন, যে কোনও কাজ নিষ্ঠাভরে করলেই সাফল্য আসে।’’

চপ-সিঙাড়া নিজেই ভাজতে শুরু করেন তিমির।স্যরের সঙ্গে জুটে যান স্কুলের শিক্ষাকর্মী সন্দীপনারায়ণ দেব, অর্পণ নন্দ, কল্পনা সিংহ, শ্যামল দলুই, দুর্গা দে-রা হেড । আশেপাশের টিয়াকাটি, শুশনিগেড়িয়া, অন্তপাতি, টিপাশোল গ্রামের বাসিন্দারা ক্রমে দোকানের নিয়মিত খদ্দের হয়ে ওঠেন। যদিও দাম ছিল আয়ত্তের মধ্যে।

সম্প্রতি স্কুলের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন শিক্ষাকর্মী দুর্গা দে । তিমির তাঁর চিকিৎসায় সহযোগিতাও করতে পেরেছেন । আগামী দিনে আদিবাসী-মূলবাসী শিশুদের জন্য দোকান লাগোয়া জমিতে একটি অবৈতনিক স্কুল খোলারও স্বপ্ন দেখছেন এই প্রধান শিক্ষক। ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক প্রতাপ চন্দ্র, অন্তপাতি গ্রামের অশ্বিনী দলুইরাও দোকানের খদ্দের এবং তারা বলছেন, ‘‘মাস্টারমশাই প্রমাণ করেছেন কোনও কাজই ছোট নয়।’’

তথ্য সূত্র: আনন্দবাজার

Related posts

অন্য মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় স্বামীকে আবিষ্কার করলেন স্ত্রী! উভয়কে দিলেন চরম শিক্ষা

News Desk

করোনা জয়ীদের টিকা প্রদানে নয়া নির্দেশিকা। জানুন কত মাসের জন্যে টিকায় না!

News Desk

মঙ্গলের মাটিতে অক্সিজেন! অসাধ্য সাধন প্রযুক্তির

News Desk