অলৌকিক কাণ্ডের জিগির শ্মশানে, ফের তারাপীঠ তোলপাড়! প্রাণের স্পন্দন দেখা গিয়েছে দেহ দাহ করার আগেই না কি! মুখাগ্নি করার সময় না কি কেঁপে উঠেছে হাত। সাম্প্রতিককালে এমনই গুজবে বৃদ্ধা সরস্বতী চক্রবর্তীর(৮০) মৃতদেহ (Dead Woman) নিয়ে টানাপোড়েন চলল সারাদিন। শেষে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ থেকে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে সার্টিফিকেট দেওয়ার পর সেদিন সন্ধ্যায় দেহ দাহ করা হয় তারাপীঠে। মৃতার নাতি কাজল চক্রবর্তী জানান, “শুধুমাত্র একটি গুজবের জেরে সারাদিন দিদাকে নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হল আমাদের।”
তারাপীঠ বামদেব পল্লির বাসিন্দা সরস্বতী চক্রবর্তী বার্ধক্যজনিত রোগে বেশ কিছুদিন ধরেই শয্যাশায়ী ছিলেন। সেই সময় অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানীয় তারাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। সেদিন ভোর তিনটে নাগাদ মৃত্যু হয় সরস্বতীদেবীর নিজের বাড়িতেই । তাঁর ডেথ সার্টিফিকেট দেন স্থানীয় চিকিৎসক দেখে । সেই সার্টিফিকেট নিয়েই সকাল ন’টা নাগাদ তারাপীঠ শ্মশানে সরস্বতীদেবীকে দাহ করতে নিয়ে যায় চক্রবর্তী পরিবার। মুখাগ্নি করার সময় হঠাৎই আওয়াজ ওঠে, “বুড়ির হাত নড়ছে। জেগে উঠছেন সরস্বতী চক্রবর্তী।”
সেই গুজবে শ্মশানে তারা মায়ের নামে ধ্বনি ওঠে, ভিড় জমতে থাকে । কারণ, কথিত আছে তারাপীঠে পুর্নজন্ম হয় কাটা শোল মাছের । জীবিত কুণ্ডের জলের স্পর্শে জেগে ওঠে মৃত বণিকের ছেলে । ভিড়ের মাঝে সেই মৃতদেহের গায়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয় জীবিত কুণ্ডের জল এনে । শ্মশানে হাজির হয় তারাপীঠ থানার পুলিশ ভিড় সামাল দিতে । ভিড় সরিয়ে দেওয়া হয় করোনাবিধি মেনে। স্থানীয় চিকিৎসক দেবাশিস চক্রবর্তীকে ডাকা হয় । তিনি এসে জানিয়ে দেন, বেশ অনেকক্ষণ আগেই মৃত্যু হয়েছে সরস্বতীদেবীর। কিন্তু পুলিশ সরকারি সার্টিফিকেট ছাড়া দেহ দাহ করতে বাধা দেয় ।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে পুলিশ দেহ তুলে নিয়ে যায় । কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, যেহেতু হাসপাতালে দেহ আনা হয়েছে মৃত অবস্থায়, তাই মৃতের সার্টিফিকেট দেওয়া যাবে না ,দেহের ময়নাতদন্ত ছাড়া । কিন্তু মৃতার পরিবার বেঁকে বসেন । তাঁরা জানান, তারা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীকে দেখিয়েছেন আগের দিনই । তার রিপোর্ট-সহ তাদের কাছে আছে সরকারি টিকিট । তারই ভিত্তিতে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বিকেলে মৃত বলে সার্টিফিকেট দেয় সরস্বতী দেবীকে ।