ছত্রিশগড়ের কোন্ডাগাঁওয়ের মানুষ এক অদ্ভুত বিয়ের সাক্ষী থাকলো। জানা গেছে যে ওই বিবাহ চলাকালীনই কনে অর্থাৎ পুত্রবধূ সন্তান প্রসব করেছেন। গোটা এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে এই ঘটনায়। কিন্তু ওই বিবাহের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে বিশাল ধুমধাম করে। তার
শশুরবাড়ির সদস্যরা তাদের পুত্রবধূকে সসম্মানেই বাড়িতে নিয়ে আসেন।
সম্প্রতি ছত্তিসগঢ় রাজ্যের কোন্ডাগাঁও জেলার বাঁশকোট গ্রামে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে। ওই নববধূর শ্বশুরবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, ছত্তিসগড় ও তার প্রতিবেশী ওড়িশা রাজ্যের সীমান্তবর্তী বদেরাজপুর ব্লকের বাঁশকোট গ্রামের বাসিন্দা চন্দম নেতাম নামে এক যুবকের বিবাহ সম্প্রতি ঠিক হয় ওড়িশার বাসিন্দা শিববতী নামে এক যুবতীর সাথে। গত ৩১ জানুয়ারি সেই মতো বিবাহের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে বলে কথাবার্তা পাকা হয় বর-কনে দু’পক্ষের মধ্যে। যেমন কথা তেমন কাজ। দুই পরিবারে বিয়ের প্রস্তুতিও চলছিল জোর কদমে। বিয়ে উপলক্ষ্যে একেবারে সাজো সাজো রব দুই পরিবারে। সকল আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিয়েতে আয়োজনের এতটুকু খামতি ছিল না । পাশাপাশি নেহাত কম ছিল না নিমন্ত্রিত অথিতিদের সংখ্যাও। সবই ঠিক ছিল এ পর্যন্ত।
জানা গিয়েছে ৩১ জানুয়ারি মূল বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। তার আগে ৩০ জানুয়ারি পাত্রপক্ষের বাড়ি থেকে পাঠানো হলুদ দিয়ে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলছিল কনের বাড়িতে। ঠিক সেই সময়েই এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, আচমকাই পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন পাত্রী শিববতী ওই গায়ে হলুদের মণ্ডপে। পাত্রী শিববতীকে গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তড়িঘড়ি পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে। জানা গিয়েছে ফুটফুটে একটি পুত্রসন্তানের ওখানেই জন্ম দেন পাত্রী শিববতী। ভাবী পুত্রবধূর সন্তানপ্রসবের কথা মুহূর্তের মধ্যে গোটা গ্রামে ছড়ানোর পাশাপাশি পৌঁছে যায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে।
এরপর তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নিজের ভাবী পুত্রবধুকে আশীর্বাদ করতে ছুটে আসেন। পাত্র চন্দন নেতামের বাবা ছেদিলাল নেতাম ঘটনায় সাফ জানান, ‘‘পুত্রবধূর পুত্রসন্তান হওয়ায় ঘরে বিয়ের আনন্দ আরও দ্বিগুণ হয়েছে।’’ নববধূর শাশুড়ি সরিতা মাণ্ডবী জানিয়েছেন, আজও পৃথু প্রথার প্রচলন রয়েছে ওই এলাকার আদিবাসীদের মধ্যে। তিনি জানান এই প্রথার নিয়ম অনুসারে গত বছর জন্মাষ্টমীতে প্রথম তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করেন শিববতী। ভাবী শ্বশুরবাড়িতে ছ’মাস অতিবাহিত করার পর পাত্রী নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। তারপর বিবাহের দিন ও পাকাপাকি কথাবার্তা হয় পাত্র ও পাত্রী দুই পরিবারের লোকজনের মধ্যে। যাবতীয় অনুষ্ঠান চলছিল সেই মতো বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনায় গোটা এলাকায় রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তবে আনন্দিত শ্বশুর- শাশুড়ি থেকে শুরু করে পরিবারের বাকি সদস্যরা পুত্রবধূর সঙ্গে আদরের নাতিকে পেয়ে। এমনকী বিয়ের পিঁড়িতে স্বামীর গলায় মালা পরিয়েছেন শিববতী নিজের পুত্রসন্তানকে নিয়ে। মহা ধুমধামে বিয়ের অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে।
