Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

কার্তিক মাসে প্রতিদিন সন্ধাবেলা কেন জ্বালানো হয় আকাশপ্রদীপ?

আশ্বিন মাস শেষ, দুর্গাপুজো ধুমধাম করে পালনের পর চলছে মা শ্যামাকে আরাধনার প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে কুয়াশার চাদর জড়িয়ে হাজির কার্তিক মাস। আবহাওয়া জানান দিচ্ছে ঋতু পরিবর্তনের। হিমের পরশ লাগছে গায়ে। এই কার্তিক মাসে হিন্দুদের রীতি রয়েছে দীপদান করার। যদিও এখন কালের নিয়মে এবং আধুনিক জীবন যাপনের অভ্যাসের মাঝে প্রায় হারিয়ে গিয়েছে আকাশ প্রদীপ দেওয়ার চল কিন্তু দুই থেকে তিন দশক আগে পর্যন্তও কার্তিক মাস আসলেই বাংলার ঘরে ঘরে জ্বলে উঠত আকাশ প্রদীপ। অবশ্য এখনও কিছু কিছু বাড়িতে কার্তিক মাসের সন্ধ্যায় জলে ওঠে আকাশ প্রদীপ। আবার সময়ের অগ্রগতির সাথে অনেক বাড়িতে দেখা মেলে বৈদ্যুতিক আলোর মাটির প্রদীপের জায়গায় কিন্তু আস্তে আস্তে এর সংখ্যা কমছে।

কিন্তু কি এই আকাশ প্রদীপ? কেনই বা কার্তিক মাসে আকাশ প্রদীপ দেওয়া হয়? রইল উত্তর

আকাশ প্রদীপ কার্তিক মাসের সন্ধায় জ্বালানো আকাশ মুখী দীপ। এই মাসে বাড়ির সবথেকে উঁচু কোনো জায়গায় কি বাঁশের ডগায় করে একটি প্রদীপ উত্তর অথবা পূর্ব দিকে মুখ করে রেখে জ্বালানো হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলায় মাটির প্রদীপে ঘি বা তেল দিয়ে জ্বালানো হয়।

হিন্দু পুরাণ মতে আশ্বিন মাসের অমাবস্যা তিথিতে মহালয়ার দিন পূর্ব পুরুষকে স্মরণ করে তর্পণ করা হয়। এই সময়ে আমাদের দেওয়া জল গ্রহণ করতে পূর্বপুরুষরা নেমে আসেন মর্ত্যধামে। তার পরের একটা মাস তারা এই ধরাধামে আমাদের আশে পাশেই থাকেন। কিন্তু কালিপূজোর অমাবস্যার আগেই তাঁদের ফের স্বর্গে ফিরে যাওয়ার পালা। জল গ্রহণ শেষে তারা আবার ফিরে যাবেন পরলোকে। কিন্তু আঁধারে তাদের পথ দেখাবে কে? তাই তাদের পথ দেখানোর জন্য কার্তিক মাসের সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাতভর আকাশ প্রদীপ জ্বেলে রাখা হয়।

অবশ্য শুধু তাই নয়, কথিত আছে কার্তিক মাস বিষ্ণুর মাস। কার্তিক মাসে দীর্ঘ চার মাসের যোগনিদ্রা সমাপ্ত করে জেগে ওঠেন শ্রী বিষ্ণু। তাঁর উদ্দেশ্যে হিন্দু ধর্মবলাম্বীরা কার্তিক মাসের শুরু ঘে সংক্রান্তির দিন পর্যন্ত তার উদ্দেশ্যে দ্বীপ জ্বালান। এমন মনে করা হয় ভক্তদের আকাশ প্রদীপ অর্পণে তুষ্ট হয়ে ভগবান বিষ্ণু তাদের সকল ইচ্ছা পূর্ণ করেন।
এই কারণে আকাশপ্রদীপ জ্বালানোর সময় মন্ত্র উচ্চারণের রীতি আছে। জ্বপ করতে হয়- ‘’আকাশে সলক্ষ্মীক বিষ্ণোস্তোষার্থং দীয়মানে প্রদীপঃ শাকব তৎ।‘’ অর্থাৎ আকাশে লক্ষ্মীর সাথে অবস্থান করছেন যে বিষ্ণু, তাঁর উদ্দেশে দেখানো হল এই প্রদীপ। এটি ছাড়াও আকাশপ্রদীপ শীতকালে মানুষের আগুন জ্বালানোর বিষয়কে বোঝায়। যা কালের আবর্তে পরিনত হয়েছে ব্রাহ্মণদের অগ্নিহোত্র রক্ষার আচারে।

বর্তমান সময়ে অতীতের সঙ্গে যোগ কমছে। তাই স্মৃতির সঙ্গে বাড়ছে দূরত্ব। আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন গ্রাম বাংলার রীতি নীতি। ক্রমশঃ তাই কমে আসছে কার্তিক মাসে আকাশ প্রদীপের দেখাও।

Related posts

ব্রাশ করার সময় বাথরুমে পা পিছলে বিপত্তি! তরুণীর গাল ফুঁড়ে বেরোলো ব্রাশ, তারপর…

News Desk

ইনস্টাগ্রামের সর্বাধিক ধনী , রোনাল্ডোর একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টের দাম কত কোটি টাকা জানলে চমকে উঠবেন

News Desk

দুধের শিশুকে একা ঘরে তালা দিয়ে পালাল মা! ১০ ঘণ্টা আটকে রইলো একরত্তি, তারপর..

News Desk