সারা বিশ্বে ফের বাড়তে শুরু করেছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং সাথে সাথে মৃতের সংখ্যাও। ব্রাজিল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ব্রিটেনের মতো দেশে আবার চড়ছে করোনা গ্রাফ। বাড়ছে কোভিড হানা। দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সবে সবে কাটিয়ে উঠতেই দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। এই নিয়ে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু (World Health Organization)। হু-র (WHO) প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রেইয়েসুস জানিয়েছেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্যি যে ইতিমধ্যেই আমরা করোনা তৃতীয় ঢেউয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছি।’’
হু-র টেড্রস আরো বলেছেন, করোনা ভাইরাসের ডেল্টা প্রজাতির ছড়িয়ে পড়েছে আর তার সঙ্গে করোনা বিধি নিষেধের না মেনে চলার প্রবণতায়ও বাড়ছে। অনেক দেশে টিকাকরণের গতিও শ্লথ। এর হওয়ার ফলে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে নতুন করে। সাথে বাড়ছে করোনায় মৃত্যুও। ঊর্ধ্বমুখী করোনার এই বিস্তার দেখেই আসন্ন তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্কতা জারি করে হু জানিয়েছে, করোনা ভাইরাস যে ক্রমশ নিজের রূপ পাল্টে ফেলছে এবং দ্রুত আরও সংক্রামক রূপ নিচ্ছে, তা ভুলে গেলে চলবে না।
ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রায় ১১১টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার অতি সংক্রামক প্রজাতি ডেল্টা স্ট্রেন। ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে শ্লথ টিকাকরণ ও মাস্কবিধির না মামা। ইত্যাদি নানা কারণেই এহেন সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত, জানিয়েছেন গবেষকরা। হু প্রধান টেড্রসের কথায়, ‘ আমাদের ভয়, খুব দ্রুত এই ডেল্টা রূপ গোটা পৃথিবীতে আধিপত্য করবে।’’ জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ ডেভিড ডাউদির মতে, ” সংক্রমনের বিস্ফোরণ ঘটানোর ক্ষমতা রয়েছে করোনার ডেল্টা প্রজাতির।” রাশিয়া, বেলজিয়াম ও আর্জেন্টিনায় বেলাগাম বাড়ছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশ্বে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা গত চার সপ্তাহ ধরে আবার নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। বুধবার মায়ানমারে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৫৪ হাজার মানুষ। পাশাপাশি গত দু’সপ্তাহ ধরে আমেরিকাতেও প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা।
হু প্রধানের পরামর্শ, ‘‘ আগামী সেপ্টেম্বরের মাসের মধ্যেই পৃথিবীর প্রত্যেক দেশকে তাদের মোট জনসংখ্যার অন্তত ১০ শতাংশ জনগণকে করোনা টিকা দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। আর ২০২১ সাল শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বের অন্তত ৪০ শতাংশকে করোনা টিকা দিতে হবে।’’