বর্তমানে সমাজ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয় ঘটে মানুষের মধ্যে আর সেই পরিচয় থেকে প্রেমের পরিণতিও হয়। তেমনই বাংলাদেশের নোয়াখালী এলাকায় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক এবং টিকটক এ বিলকিসের সঙ্গে টাঙ্গাইলের আঁখির পরিচয় হয়। তারপর তাদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়তে থাকে হোয়াটসআপ এ। দুজন দুজনের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পরে, ধীরে ধীরে ঘনিষ্টতা আরও তীব্র হতে থাকে। সোমবার রাতে প্রেমিকাকে বিয়ে করার জন্য ‘সব বাধা পার করে’ প্রেমিকার কাছে ছুটে এসেছিলেন বিলকিস। কিন্তু তাদের পরিবার কোনোমতেই মেনে নেয়নি এই সমকামী যুগলকে। খুব তাড়াতাড়ি এই খবর অনেক দূর ছড়িয়ে পরে। যদিও ওই যুগল কেউ কাউকে ছাড়তে রাজি নয়।
তারা ঘর থেকে দূরে চলে গিয়ে থেকেও ছিলেন মাস তিনেক। যদিও পরিবারের লোকের আপত্তি আর জোর করে ফিরে আসে তারা। তখন তাদের আচরণ ঠিক মনে না হওয়ায় ফিরিয়ে দেওয়া হয় পরিবারের কাছে। একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারছেনা তারা। বিলকিস এবং আঁখি একে অপরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন গত রবিবার ২০ মার্চ। এরপরেই একে অপরের সঙ্গে তাঁরা থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
এবার দুই কিশোরী আরও বেপরোয়া। নার্গিস স্পষ্ট জানিয়েছে, ” আমার কাছে এসেছে বিলকিস। আর ফিরতে দেব না বিলকিসকে।”
ওই এলাকায় তাদের এই অস্বাভাবিক বিয়ের কারণে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এলাকার উৎসুক জনতা দুই কিশোরীকে দেখতে ভিড় করছে। বিরল এ ঘটনাটি সোমবার (২১ মার্চ) ঘটেছে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের ময়থা গাছপাড়া গ্রামে।
নোয়াখালী সদর উপজেলার পূর্ব লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামে বিলকিস আক্তারের (১৭) বাড়ি। টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ময়থা গাছপাড়া গ্রামে আঁখি আক্তারের (১৫) বাড়ি। নবম শ্রেণিতে পড়ে সে।
জানা গিয়েছে, কাজ করেন ওই দুই তরুণীই। ফলে জীবনযাত্রা নির্বাহে সক্ষম তাঁরা, পরিবারের আর্থিক সাহায্য ছাড়াও। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি লড়াই করেও। এই যুগলকে আলাদা হতে হয়েছে। জানা গিয়েছে, দুই পরিবারের অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের বাসাইলে রেখে তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যাতে আর কোনওভাবেই একে অপরের সঙ্গে ওই দুই কিশোরী দেখা করতে না পারে সেই জন্য মুচলেকাও জমা দিতে হয়েছে প্রশাসনের কাছে, জানা গিয়েছে এমনটাই। কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই দুই তরুণী একে অপরের হাত ছেড়ে যাওয়ার সময়। কল্পনাও করেনি তাঁরা প্রেমের এই করুণ পরিস্থিতি।