পৃথিবীর মধ্যে স্বৈরাচারী শাসনের যে সমস্ত দেশ রয়েছে তার মধ্যে উওর কোরিয়ার মত দেশ আরেকটি ও নেই। নিউক্লিয়ার অস্ত্র, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি হুমকি-ধামকি আর বিশ্ব রাজনীতিতে কিম জং উনের খাম খেয়ালী নানা ঘটনা নিয়ে উওর কোরিয়া সব সময়ই আগ্রহে থাকে বাকি বিশ্বের কাছে। কিন্তু জানেন কি উত্তর কোরিয়ার জনগণের জন্যে প্রযোজ্য আছে এমন কিছু আইন যা শুনলে রীতিমত চোখ কপালে উঠবে। আপনি ভাবতে বাধ্য হবেন যে ভাগ্যিস উওর কোরিয়াতে আপনার জন্ম হয়নি।
রইল ওই দেশের এমনই কিছু বিদঘুটে আইনের হদিশ:
১) আন্তর্জাতিক ফোন কল করা উত্তর কোরিয়াতে একটি অপরাধ। ২০৯৭ সালে, এক ব্যক্তি যিনি উওর কোরিয়াতে বসে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক কল করেছিলেন তাকে প্রাণদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।
২) বিদেশী গান শোনা বা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র দেখা অপরাধমূলক ক্রিয়াকলাপ হিসাবে বিবেচিত হয়। ২০১৫ সালে, কিম জং উন এই বিষয়ে এক নির্দেশিকা জারী করে। অবশ্য এই অপরাধের শাস্তি আপনি কোন দেশের চলচ্চিত্র দেখছেন তার উপর নির্ভর করে। আমেরিকান চলচ্চিত্র দেখছেন এমন কারও মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে, আবার ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলি দেখলে শুধু কারাদণ্ড হতে পারে। পর্নোগ্রাফি দেখা বা সিডি বিতরণ করল হতে পারে মৃত্যদণ্ড।
৩) শুধুমাত্র পুরুষ সরকারী আধিকারিকদের গাড়ি চালানোর অনুমতি রয়েছে। উওর কোরিয়াতে মহিলারা ট্র্যাফিক অফিসার হিসাবে কাজ করলেও গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় না। সরকারী বিধিনিষেধে যদিও প্রতি ১০০ জন ব্যক্তির মধ্যে গড়ে ১জনই গাড়ি রাখার অনুমতি পায়।
৪) কিম জং উন, উত্তর কোরিয়ার সরকার বা রাজনীতিবিদদের পরিবারের অসম্মান করতে পারে এমন যে কোনও কিছুকেই নিন্দার কাজ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে।এমনকি রাষ্ট্র নেতার ছবি থেকে ধুলো ঝাড়তে ভুলে গেলেও হবে কঠোর শাস্তি।
৫) উত্তর কোরিয়া কেবলমাত্র তিনটি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে এবং সেগুলি সবই সরকার-নিয়ন্ত্রিত।
৬) কিম জং উন যে স্টাইলে চুল কাটেন সেই স্টাইলে দেশের আরো কোনো পুরুষই চুল কাটতে পারবেন না। এটা একমাত্র কিমের হেয়ারকাট। নারী-পুরুষ নির্দিষ্ট করে দেওয়া ১৫ ধরনের হেয়ারস্টাইলেই চুল কাটতে পারেন।
৭) উত্তর কোরিয়াতে নিজের ইচ্ছা মতন পেশা বেছে নেওয়ার অধিকার নেই। একজন ব্যক্তির পেশা কি হবে দেশের প্রয়োজনের ভিত্তিতে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। যারা মানেন না তাদের জোর করে শ্রম দেওয়ার জন্য কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়।
৮) উত্তর কোরিয়ার মানুষ নীল রঙের জিন্স পরিধান করতে পারেন না যেহেতু আমেরিকার পতাকায় নীল রঙ রয়েছে। এছাড়া জিন্স কে পুঁজিবাদের প্রতীক বলেও মনে করা হয়।
৯) ধর্মাচরণ করার স্বাধীনতা উত্তর কোরিয়ায় একটি মিথ। এটি সরকারীভাবে একটি নাস্তিক রাষ্ট্র। পাশ্চাত্য ধর্মের অনুশীলন এবং ধর্মগ্রন্থ এই দেশে নিষিদ্ধ। কেউ বাইবেল বিতরণ করলে তাকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
১০) উত্তর কোরিয়া দেশে জ্বালানী সঞ্চয় করতে প্রতি রাতে বিদ্যুৎ কেটে দেয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য অনুমতি প্রয়োজন এবং মাইক্রোওয়েভ রাখা অবৈধ!