দ্বিতীয় বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা এক বছর আগে করা হয়েছিল সেটার এখনও ফয়সালা হয়নি । আলিপুর থানা এলাকার বাসিন্দা স্কুল এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এর দুবছরের মধ্যে একটি নয় তিন তিনটি বিয়ে করার অভিযোগ উঠলো। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট সব জায়গায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার অভিযোগও উঠেছে একাধিক ছেলের, সোমা দাস নামে ওই মহিলার বিরুদ্ধে।
মহিলার দ্বিতীয় স্বামী রাজু মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ঘুণাক্ষরেও জানতেন না স্ত্রী সোমা দাসের আগের বিয়ের কথা। প্রথমে প্রেম, পরে পরিবারের মতে বিয়ে হয় ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট দেখাশোনা করেই। পরে সোমা নানান অভিযোগ তুলে মোটা টাকা চাইতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। রাজু জানান, ” তখনই জানতে পারি প্রথম বিয়ের বিচ্ছেদের আগেই আমার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। আবার আমার সঙ্গে ডিভোর্সের আগেই তাঁর আরও দুটি বিয়ে হয়। সেখানেও মোটা টাকা দাবি করে বিচ্ছেদ চায়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।” রাজুবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ দমদম থানায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বারুইপুরের বাসিন্দা দেবার্চন বিশ্বাস নামে এক স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে ২০১১ সালের মে মাসে হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী খাতায় কলমে এবং সামাজিকভাবে বিয়ে হয় সোমার। শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন-সহ একাধিক অভিযোগ এনে বিবাহ বিচ্ছেদ চান তিনি কয়েক বছর সংসারের পর। আলিপুর আদালতে ২০১৯ সালে সেই মামলা ফয়সালা হয়। পরিবারের সম্মতিতে এরই মধ্যে দমদমের বাসিন্দা রাজু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে করেন তিনি। পরে বিচ্ছেদও চান স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ এনে। অবশ্য বিচারাধীন রয়েছে সেই মামলা বারাকপুর আদালতে।
এরই মধ্যে ওড়িশার বাসিন্দা পেশায় সেনাবাহিনীর রেশনিং বিভাগে কাজ করা অশ্বিনী কুমারকে বিয়ে করেন সোমা ২০২০ সালের জুলাই মাসে। এই রকম নানান অজুহাতে সেখানেও বিচ্ছেদ চান তিনি। খোরপোষও দাবী করেন মোটা টাকাও। সেই মামলাও বিচারাধীন আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালতে। রাজীব বিশ্বাস নামে আলিপুর আদালতের এক আইনজীবীর সঙ্গে তারই মধ্যে তিনি বিয়ে করেন বলে অভিযোগ।
তার এই কার্যকলাপে পরিবারের সদস্যরা অসন্তুষ্ট হয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় সোমা তাদের হুমকি দেন একাধিক মামলায় ফাঁসানোর। এমনকী, তাঁর বিরুদ্ধে পরিবারের সদস্যরা হেনস্তা করার অভিযোগ তুলেছেন। অবশ্য সেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে আলিপুর থানায়। পেশায় সোমা দাসের বাবা বলরাম দাস অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী, ভাই গৌতম দাস জানান, “তাদের পরিবারের মেয়ে একাধিক বৈবাহিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় সামাজিক দিক নষ্ট হচ্ছে দেখে আগেভাগেই আলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে রাখা হয়। যাতে তার বিরুদ্ধে ওঠা কোনও প্রতারণার অভিযোগের ভাগীদার পরিবারের সদস্যরা না হন।” তবে অভিযুক্ত সোমা দাস এ বিষয়ে জানান, “মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।”