Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ঘুমিয়ে কাটে ৩০০ দিন! রাজস্থানের এই বাসিন্দা এই যুগের কুম্ভকর্ণ

রামায়ণের কাহিনী অনুযায়ী, কুম্ভকর্ণ এক বছরের মধ্যে ছয় মাস ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিতেন। এতে বৃদ্ধি পেত তার তেজ , শক্তি। কিন্তু এই যুগেও রয়েছে এমন এক ব্যাক্তি যার ঘুমিয়ে কাটানোর ক্ষমতা এর থেকেও বেশি। বছরের ৩৬৫ দিনের ৩০০ দিনই ঘুমাতে পারেন সে! বাকি ৬৫ দিন ভীষণ কষ্টেই জেগে থাকেন। এমন বিরল ঘুমের দৃষ্টান্ত গড়েছেন পশ্চিম রাজস্থানের যোধপুরের নাগৌর এলাকার বাসিন্দা বছর ৪২ এর পুরখারাম। এই কারণে ওই অঞ্চলের লোকজন তাকে রামায়ণের চরিত্র কুম্ভকর্ণের নামেই ডাকেন। এই যুগের কুম্ভকর্ণ নামে পরিচিত তিনি।

কিন্তু এ সম্ভব কি করে? কোনো স্বাভাবিক মানুষ কি করে এত ঘুমোয় যতই সে ঘুম বিলাসী হোক না কেন! পুরখারামের ক্ষেত্রে বিষয় টা একটু আলাদা। আসলে সে ঘুমোতে ভালবাসেন ঠিক এমনটা নয়। এক বিরল জটিল রোগে সে আক্রান্ত। নাগৌরের ভাওড়া গ্রামের বাসিন্দা পুরখারাম আগে এমনটা ছিলেন না। ২০১৫ সালের পর থেকে তার মধ্যে বাড়তে থাকে ঘুমের অস্বাভাবিকতা। দিনের মধ্যে ১৫ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিতেন তিনি। হঠাৎ করেই ঘুমিয়ে পড়তেন আর উঠতে পারত না। শুরুর দিকে পরিবারের লোকজন ভাবতেন, তিনি অলস , তাই এমন ঘুমিয়ে কাটাচ্ছেন। তাই বলে সারাদিন ঘুমিয়ে থাকাটা তো আর সহজ কাজ নয়। সমস্যা আরও জটিল আকার নিতে শুরু করলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই জানতে পারা যায় অ্যাক্সিস হাইপারসমনিয়ায় (Axis hypersomnia) নামের একটি জটিল রোগে আক্রান্ত পুরখারাম।

চিকিৎসকরা জানান এই ধরনের রোগ বিরলের মধ্যে বিরলতম। চিকিৎসকরা জানান, অ্যাক্সিস হাইপারসমনিয়ায় আক্রান্ত কোনও মানুষের সবসময়ই ঘুম পাবে। আর একবার ঘুমিয়ে পড়লে আর কিছুতেই ঘুম থেকে উঠা সম্ভব হয় না। আক্রান্ত ব্যক্তি হয়ত ঘুম থেকে জেগে উঠতে চাইছেন , কিন্তু তার শরীর সারা দেয় না।

৪২ বছরের পুরখারামের রয়েছে একটি মুদির দোকান। এই জটিল ঘুমের রোগে আক্রান্ত হওয়ায় পড়ে গোটা মাসে মাত্র পাঁচদিন দোকান খোলা সম্ভব হয় তার। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, একবার ঘুমিয়ে পড়লে এমন ভাবে গভীর ঘুমে চলে যায়, যে টানা ২০ থেকে ২৫ দিন ঘুম থেকে উঠতে পারে না সে।

পুরখারাম ঘুমোচ্ছেন

কিন্তু এই প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে, দীর্ঘ ২০-২৫ দিন যদি কোনও মানুষ না খেয়ে ঘুমিয়ে থাকেন কি করে?
জানা গিয়েছে, এই অতল ঘুমে তলিয়ে যাওয়ায় আগে পুরখারামের তীব্র মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়। তখন তাকে ঘুমিয়ে পড়ার আগে তড়িঘড়ি খাইয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ঘুমের মধ্যেও স্নান করিয়ে দেন তার স্ত্রী। খাওয়ানোরও চেষ্টা করেন কিছু কিছু। পুরখারামের মা কানওয়ারি দেবী এবং তার স্ত্রী লিচ্ছমি দেবীর আশা রাখেন, পুরখারাম আবার একদিন সেরে উঠবে এবং আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবেন। আপাতত সে চিকিৎসাধীন ,কিন্তু খুব একটা উন্নতির লক্ষণ নেই তার চিকিৎসায়।

Related posts

২৭ বছর আগে কাজের খোঁজে নেপাল থেকে এসে হারিয়ে যান! এত বছর পরে যেভাবে খুঁজে পেল পরিবার

News Desk

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন এই সব খাবার, বাড়বে আপনার যৌন ক্ষমতা

News Desk

মুঙ্গেলিতে আতঙ্ক! কবর খুঁড়ে মৃতদেহ খায় এই প্রাণী, নজর রাখে নবজাতক ও শিশুদের দিকেও

News Desk