দেশের নাম কাজাখস্তান৷ গ্রামের নাম কালাচি৷ এলাকার মানুষের ঘুমিয়ে পড়া রোগই গোটা বিশ্বে পরিচিত করেছে কালাচিকে৷ এই গ্রামের বিষয়টা খানিক আলাদা। কেমন আলাদা? আসলে এখানে কে, কখন, কোথায় ঘুমিয়ে পড়বে, তা তাঁরা নিজেরাও জানে না। যে-সে ঘুম না, একবার ঘুমোলে জাগতে জাগতে লেগে যেতে পারে কম করে সাত থেকে আট ঘণ্টা৷ শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিরাও রক্ষা পায় না ‘কাল ঘুম’ থেকে৷ হ্যাঁ, কাল ঘুমই বটে৷ কারণ কালাচির ঘুমের মারাত্মক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রয়েছে৷ কেমন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া?
লম্বা ঘুম ভাঙার পর নানারকম শারীরিক অস্বস্তি দেখা দিচ্ছে৷ যেমন তীব্র মাথা ব্যথা, বমি ভাব৷ কারও কারও আবার রক্তচাপ বেড়ে যাচ্ছে মাত্রাহীন পর্যায়ে৷ স্মৃতি লোপ পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে৷ শিশুদের অস্বস্তি খানিক আলাদা। জানা গিয়েছে, ঘুম ভাঙার পর চরম হ্যালুসিনেশন তৈরি হচ্ছে শিশুদের মধ্যে৷ আজব সব দৃশ্য দেখছে তারা৷ অন্যদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে যৌন আকাঙ্ক্ষা৷ এবং ঘুম-রোগ ভাঙার পর সাত দিন থেকে এক মাস অবধি থেকে যাচ্ছে এমন সব শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা৷
মারণ ঘুমের কারণটা কী?
নাঃ। চিকিৎসকরা একশ শতাংশ উত্তর দিতে পারছেন না৷ প্রথমটায় তাঁদের সন্দেহ ছিল, গ্রামবাসীরা বুঝি কোনও মানসিক রোগে আক্রান্ত৷ বৈজ্ঞানিক, রেডিওলজিস্ট, টক্সিকোলজিস্টরা গ্রামে এসে ঘুমের কারণ সন্ধান করেন৷ স্থানীয় জল-মাটিরও পরীক্ষা হয়৷ এইসময়েই গ্রামের বাসিন্দাদের মস্তিষ্ক স্ক্যান করা দেখা যায়, এদের মস্তিষ্কের কোষে রয়েছে অতিরিক্ত তরল৷ চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘ইডিমা’৷ যদিও গ্রামবাসীদের সন্দেহ, এই ঘুমের পেছনে রয়েছে কালাচির কাছাকাছি ক্রাসনোগোরস্কি অঞ্চলের ইউরোনিয়াম খনির বিষাক্ত বাতাস৷