ঝাড়গ্রামে এক সাত মাসের শিশুর মৃত্যু ঘিরে উঠে এলো ভয়াবহ এক অভিযোগ। নদীতে মায়ের হাত থেকে পড়ে গিয়েছিল শিশুসন্তান। জলে ডুবে মারা যায় সে। তার দেহ উদ্ধার করে পুঁতে দেওয়া হয় মাটিতে। পরে শ্বশুরবাড়ির পরিজনের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, মা-ই ছুঁড়ে ফেলেন সন্তানকে। পুলিস তদন্ত নেমে মৃত শিশুর দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) জামবনি থানার ফুলবেড়িয়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পারিবারিক অশান্তির জেরে মা নিজেই তার ছোটো শিশুপুত্রকে জলে ফেলে দেন। পরে গ্রামবাসীরা জানতে পারে জলে ভেসে গেছে শিশুটি। তারা ছোট শিশুটির দেহ উদ্ধার করে তা মাটিতে পুঁতে দেয়। কিন্তু ওই মৃত শিশুটির ঠাকুমা অর্থাৎ মহিলার শাশুড়ি পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানায় হাত ফস্কে নয় শিশুটির মা নিজেই ইচ্ছাকৃত ফেলে দিয়েছে ওই শিশুটিকে জলে। অভিযোগ পেয়ে জামবনি থানার পুলিশ সাতমাসের ওই শিশুপুত্রকে জলে ফেলে হত্যার অভিযোগে মাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলার নাম রূপালি নায়েক। তাঁর শাশুড়ি গীতা নায়েকের থানায় দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই শিশুটির মাকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম আদালতে ওই মহিলাকে তোলা হলে বিচারক ওই মহিলাকে দু’দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, রূপালি নায়েকের শ্বশুরবাড়ি ঝাড়গ্রামের জামবনি থানার কাপাসিয়া গ্রামে। গত প্রায় দেড় বছর ধরে স্বামীর সাথে অশান্তির জেরে তিনি ফুলবেড়িয়া গ্রামে বাপেরবাড়িতে থাকতেন। রূপালির স্বামী পেশায় দিনমজুর। কিন্তু উপার্জনের কোনো টাকাই তিনি বাড়িতে দিতেন না বলেই রূপালি দেবীর অভিযোগ। সেই কারণে তার স্ত্রীর সাথে প্রায়ই ঝামেলা লেগে থাকত বলে জানা যায়। পারিবারিক অশান্তির কারণেই তার স্ত্রী নিজের সাত মাসের পুত্রসন্তান কে নিয়ে বাবার বাড়ী চলে যান। সোমবার সকালে গ্রামের নিকটবর্তী ডুলুং নদীতে শিশুটিকে ছুড়ে ফেলে দেন মা। গ্রামের মানুষ মনে করেন, শিশুটি হয়ত কোনও ভাবে মায়ের হাত ফসকে নদীতে পড়ে গিয়েছে। তাঁরাই গিয়ে উদ্ধার করে। ততক্ষণে শিশুটি মারা গেছে। শিশুর দেহ মাটির তলায় পুঁতে দেন। পরে শাশুড়ি গীতা নায়েকের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তার বউমা রুপালি নায়েককে গ্রেফতার করে পুলিস। মাটির তলা থেকে শিশুর দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে (Jhargram Hospital) পাঠায়।