১৯৮০ সাল থেকে ২০২১ সাল। মাঝে কেটে গেছে ৪১ বছর। অলিম্পিকে পুরুষদের হকিতে (Men’s Hockey Team) পদক জয়ের পোডিয়ামে আবারও উড়ল তিরঙ্গা। হকিতে ব্রোঞ্জ এনে দিল ভারতীয় পুরুষ হকি দল। ১৯৮০ সালে পোডিয়াম ফিনিশের পর এই আবার পোডিয়ামে ওঠার সুযোগ হচ্ছে ভারতের। ব্রোঞ্জ মেডেল জিতে দেশে ফিরছে শ্রীজেশরা। তৈরি হল অলিম্পিকে ইতিহাস। তবে এই ইতিহাস তৈরীর কাজটা এতটাও সোজা ছিল না। বেলজিয়ামের কাছে সেমিফাইনালে হারের পর সোনা জেতার আশা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তাতেও দমানো যায়নি মনপ্রীতদের। যার প্রমাণ পাওয়া মিলল ব্রোঞ্জ পদক জেতার লড়াইয়ের ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে। এই ম্যাচে রীতিমত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জার্মানিকে হারালো ভারত। এই জয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছসিত দেশ। ভারতীয় হকি দলের জয়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
টোকিও অলিম্পিক্সে প্রথম থেকেই ভারতীয় পুরুষ দলের পারফরম্যান্স ছিল ভাল। টানা চার ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের খেলেছিল। সেই ম্যাচে জিততে না পারলেও ৪১ বছর পর ব্রোঞ্জ পদক জয়ের আশায় নেমেছিল ভারত। সামনে ছিল জার্মানি। কিন্তু ভারত প্রথম দিকে সুবিধা করতে পারেনি। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল জার্মানি। এর কারণে ম্যাচ শুরুর ২ মিনিটের মাথায় একটি গোলে এগিয়ে যায় তারা। ভারতের ডিফেন্স প্রতিরোধ ভেদ করেন গোল করেন জার্মানির টিমুর অউর্জ। তবে এক গোল খাওয়ার পরও দমে যায়নি ভারত। জোড়া গোল করে আজকের ম্যাচের হিরো সিমরণজিৎ। শুরুতে পিছিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াল ভারত। পাল্টা লড়াই চালিয়ে যান মনপ্রীতরা। এই পাল্টা লড়াইয়ে ম্যাচের ৭ মিনিটের মাথায় একটি পেনাল্টি পেয়ে যায় ভারত। যদিও তা গোলে বদলাতে পারেনি। এরপর ম্যাচের ১২ এবং ১৫ মিনিটের সময় জার্মানি পরপর একটি পেনাল্টি ও গোলের সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু, ভারতের ডিফেন্স আটকে দেয় তাদের।
দ্বিতীয় কোয়ার্টারে মাত্র ১.৩০ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল খেয়ে প্রায় ম্যাচ থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিল। এক সময় ১-৩ গোলে ম্যাচে পিছিয়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু দ্বিতীয় কোয়ার্টারেই ফিনিক্স পাখির মতো উঠে এল ভারত। তৃতীয় কোয়ার্টারে পেনাল্টি মিললে এবারে আর গোল করতে ভুল করল না রূপিন্দর পাল সিং। তারপরেই ম্যাচে এগিয়ে যায় ভারত। মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে চারটি গোল করে পুরোপুরি খেলা নিজেদের পক্ষে করে নেয় মনপ্রীত সিংরা। এই হার না মানা মানসিকতার সৌজন্যে অলিম্পিক্সে ৪১ বছরের হকিতে পদকের খরা কাটল ভারতের।