Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

দরিদ্র দৃষ্টিশক্তিহীন এই ব্যাক্তি আজ কোটি টাকার কোম্পানির মালিক, কোম্পানির সব কর্মচারীও অন্ধ

প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু খামতি থাকেই। কিন্তু কিছু মানুষ নিজের মধ্যে থাকা সেই কমতিকেই নিজের সবথেকে বড় শক্তি বানিয়ে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই প্রতিবেদনে একজন এমন দৃষ্টিশক্তিহীন উদ্যোক্তার কথা বলব তিনি তার অক্ষমতাকে তার ক্ষমতার মাধ্যম বানিয়েছিলেন এবং সান রাইজ ক্যান্ডেল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা আজ ২৫ কোটি টাকা মূল্যের কোম্পানি। শুধু তাই নয় এই মোমবাতি তৈরীর সংস্থাটি শুধুমাত্র দৃষ্টিশক্তিহীন প্রতিবন্ধী মানুষের দ্বারাই পরিচালিত হয়। এই মোমবাতি কোম্পানি ব্যাবস্থা করেছেন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ এর কর্মসংস্থানের। তার নাম ভবেশ ভাটিয়া। তিনি মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলা সাংঘভি কসবার বাসিন্দা।

ভবেশ ছোটো থেকেই অন্ধ ছিলেন না। কিন্তু তার বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার চোখের দৃষ্টিশক্তিও কমতে শুরু করে। আসলে ভবেশ ভাটিয়া রেটিনা পেশী অবনতি (retina muscular deterioration) রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই সমস্যার কারণে লেখাপড়ার সময় তাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যখন তার কুড়ি বছর বয়স হয় সেই সময় তার দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি চলে যায়। ফলে তার পড়াশুনা প্রায় শেষ হয়ে যায় তাই তার মা তাকে বই পড়ে শোনাতেন। ভবেশ মানসিকভাবে খুব ভেঙ্গে পড়েছিলেন, কিন্তু তার মা তাকে হার না মানার জন্য উৎসাহিত করতেন সব সময়। এই কারণে ভবেশ দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার পরেও তিনি নিজের শেখার ইচ্ছাকে হারিয়ে যেতে দেয়নি।

bhavesh bhatia inspiring story

অন্ধ হওয়ার কিছুদিন পর, ভাবেশ ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর ব্লাইন্ড (এনএবি) -এ ভর্তি হন এবং সেখান থেকে মোট ৪ মাসের মোমবাতি তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। এর বাইরে, ভবেশ সেখান থেকে আকুপ্রেশার থেরাপি এবং ব্রেইল এর প্রশিক্ষণও পেয়েছিলেন। এই সমস্ত প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর ভাবেশ নিজের মোমবাতি তৈরির ব্যবসা শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টাকা না থাকার কারণে তিনি তা করতে পারেনি। ব্যাবসার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কেনার টাকা তার কাছে ছিল না। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা বেশী একটা ভালো না হওয়ায় তারাও এই বিষয়ে সাহায্য করতে পারছিলেন না।

তাই সেই সময়ে ভবেশ ফিজিওথেরাপীর কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে যা আয় করতেন তা জমিয়ে তিনি মোমবাতির জন্য কাঁচামাল কেনেন। এই ভাবে তিনি কাঁচামাল কিনে মোমবাতি তৈরি করে রোজ সকালে মহাবালেশ্বর রাস্তার ধারে একটি ছোট দোকানে দিয়ে সেখানে মোমবাতি বিক্রি করতেন। এই কেনাবেচার সূত্রে তার সাথে দেখা হয় নীতা নামের একটি মেয়ের, নীতা তাকে মার্কেটিং এ সাহায্য করা শুরু করেন। এরপর নীতা ও ভবেশ এর বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে প্রেমে পরিনত হয় এবং তারা বিয়ে করে নেন।

তাদের বিয়ের পর ব্যাংক থেকে ভবেশ ১৫ হাজার টাকার লোন পান। সেই টাকা দিয়ে ভবেশ নিজের মোমবাতির ব্যবসাকে আরো বড় করার কাজে লেগে পড়েন। ১৯৯৭ সালে ভবেশ ভাটিয়া “সানরাইজ ক্যান্ডেলস” নামে একটি মোমবাতি প্রস্তুতকারক কোম্পানি খোলেন। সেখান থেকে ভবেশের উত্থান শুরু হয়। আস্তে আস্তে তার মোমবাতি তৈরীর কোম্পানী অনেক অর্ডার পেতে থাকে। এবং বড় বড় কর্পোরেট সংস্থার দিওয়ালি মোমবাতির অর্ডারও তিনি নেন। আজ তার কোম্পানির লাভ কোটি কোটি টাকার। শুধু তাই নয় বহু পরিবার ভবেশএর কোম্পানী থেকে আয়ের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। ভবেশ ভাটিয়া চোখে আলো না থাকলেও বহু মানুষের জন্যে তিনি আলোর দিশারী।

Related posts

১২ বছরের বাচ্চা মেয়েদের সাথে এ কি জঘন্য কাজ করলেন ৫৯-এর বৃদ্ধ! সামনে এলো জঘন্য কীর্তি

News Desk

দুর্গাপুজো সর্বসাধারণের জন্য নয়! ক্ষোভে প্রথম বারোয়ারী দুর্গা পুজো শুরু হয় হুগলির গুপ্তিপাড়ায়

News Desk

টেলিগ্রাম: যেখানে নারীদের নগ্নতা প্রকাশ্যে শেয়ার করা হয়! তদন্তে উঠে এল ভয়াবহ সত্য

News Desk