অন্তসত্ত্বা অবস্থায় গর্ভে থাকা সন্তান কে নিয়ে দশ মাস দশ দিন প্রসব যন্ত্রনা সহ্য না করলে মা হওয়ার আনন্দ উপভোগ করা যায়না। এমনটাই স্বাভাবিক যদিও। কিন্তু একটি ব্যতিক্রম ঘটনাও রয়েছে, ব্রিটিশ (United Kingdom) তরুণী জেস ডেভিসের সাথে ঘটেছে এই ঘটনাটি যা ঠিক উলটো। প্রসব যন্ত্রনা হওয়ার কথা তো ছেড়েই দিন, সেই তরুণী যে গর্ভবতী তা তিনি নিজেই জানতেন না। কখনও বুঝতেও পারেননি যে তিনি সন্তানসম্ভবা ! কিন্তু একটু পেটে ব্যাথা নিয়ে বাথরুমে যেতেই যেন হতবাক ! জন্ম নিল তাঁর সন্তান! তখনই ওই তরুণী বুঝতে পারলেন যে তিনি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। খোদ চিকিৎসকরাই ব্রিটেনের জেস ডেভিসের এই ঘটনায় বিস্মিত। বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনা নিয়ে রিসার্চ করতে চাইছেন তারা।
ইউনিভার্সিটি অফ সাউদাম্পটনের (University of Southampton) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বছর কুড়ির জেস ডেভিস। বেশ কাটছিলো তাঁর জীবন পড়াশোনা আর পার্টি করে। কোনও রকমের সমস্যায় ছিলনা তাঁর জীবনে। হঠাৎ করেই একদিন পেটে ব্যাথা শুরু হয় আর সে কারণেই বাথরুমে যান তিনি। আর সেখানেই জন্ম দিলেন তাঁর সন্তানের। পরে সম্পূর্ণ ঘটনা বলতে গিয়ে তিনি জানান , ”মারাত্বক চাপ আসছিল। যেন কিছু একটা আটকে আছে আর সেটা বেরোতে চাইছে। যেই চাপ মুক্ত হতে চাইলাম তখনই আমি কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখনই তাকিয়ে দেখি আমি এক সন্তানের জন্ম দিয়েছি। আমার কাছে এই ঘটনা একেবারে অবাক করা, বেশ অন্যরকম এক অনুভূতি হল, মনে হল যেন আমার অনেক দায়িত্ব বাড়লো, ভালোবাসার এক ছোট্ট মানুষ পেলাম , এবার আমাকেও একটু পরিণত হতে হবে।”এই বিস্ময়ের ঘোর কাটাতে জেস সঙ্গে সঙ্গে ফোন করেন নিজের বন্ধুকে। এ ব্যাপারে এক চিকিৎসকের সাথে কথা হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন চিকিৎসক।
কিন্তু জেসের গর্ভবতী হওয়ার সত্যিই কি কোনও লক্ষ্ণণ ছিল না? তেমনটাও ঠিক নয়। যা যা লক্ষ্মণ আসলে দেখা গিয়েছিল, তার কোনওটাই বুঝে উঠতে পারেননি মাতৃত্ব সম্পর্কে একেবারে অনভিজ্ঞ জেস। তিনি নিজেই বলছেন, বরাবরই একটু গোলমেলে আমার ঋতুচক্র । ও নিয়ে আমি ভাবিনি কোনওদিন। বমিভাব, মাথা ঘোরা মাঝেমধ্যে হয়েছে। কিন্তু তেমন গুরুত্ব দিইনি। নতুন করে ওষুধ খাচ্ছিলাম।” এমনকী মাতৃত্বকালীন কোনও লক্ষ্মণও ফুটে ওঠেনি তাঁর শরীরে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জেস ৩.৫ মাসে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তাকে হাসপাতালে ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। পুত্র সন্তানের প্রায় ৫ পাউন্ড ওজন। আচমকা মা হওয়ার বিস্ময় কাটিয়ে জেস নিজে ভরপুর উপলব্ধি করছেন। বলছেন, ”পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শিশু ও, ওর সঙ্গে সুন্দর একটা সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই আমার।”
