দিল্লি পুলিশ যৌন পরিষেবা দেওয়ার নাম করে বিদেশী নাগরিকদের প্রতারণা করছিল এমন একটি কল সেন্টারের কীর্তি ফাঁস করেছে এবং কল সেন্টারের মালিক সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্তরা পর্ন সাইটে পর্ন মডেলের ভুয়ো ছবি পোস্ট করে বিদেশি নাগরিকদের যৌন পরিষেবা দেওয়ার অজুহাতে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা করছিল।
কল সেন্টার থেকে এই অপরাধে ব্যবহৃত নয়টি হার্ডডিস্ক উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত, ৩৯ বছর বয়সী রবি শেখর সিং, ২৬ বছর বয়সী তরুণ, ২৯ বছর বয়সী কৃষ্ণ কুমার এবং ২১ বছর বয়সী সত্যম তোমরকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
দিলশাদ গার্ডেনের মৃগনয়নী চকের কাছে একটি বাড়িতে ভুয়ো কল সেন্টার চালানোর খবর পায় পুলিশ। সেই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ একটি টিম গঠন করে। দলটি দিলশাদ গার্ডেনের মৃগনয়নী চকের বাড়ির চতুর্থ তলায় পৌঁছায়। সেখানে ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। পুলিশ দরজা খুলে দেখে ভেতরে নয়টি হার্ডডিস্ক ছিল। সেখানে উপস্থিত ব্যক্তি তার নাম রবি শেখর সিং এবং কল সেন্টারের মালিক বলে জানান। সেই সময় একটি কক্ষের ভিতরে তিন যুবক একটি কম্পিউটারে কাজ করছিল। বিভিন্ন জায়গা থেকে তোলা ভিডিও তারা পর্ন সাইটে রাখছিল। তার ওপর যৌন সেবার জন্য পর্ন মডেলদের নগ্ন ছবিও আপলোড করা হচ্ছে। পুলিশ চারজনকে আটক করে কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক ও অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করে।
অস্ট্রেলিয়ানদের সবচেয়ে বেশি টার্গেট করেছে
অভিযুক্তরা জানিয়েছে যে তারা যে কোনো দেশের নাগরিক যারাই কিনা তাদের সংস্পর্শে আসত তাদের টার্গেট করত, তবে তাদের বেশিরভাগই অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের টার্গেট করত। পর্ন মডেলের সঙ্গে যৌন পরিষেবার দামও লিখে রেখেছিলেন অভিযুক্তরা। তারা মডেল ভেদে ৫০ থেকে ৫০০ ডলার নিত।
চার মাস ধরে চলছিল কেন্দ্র
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত রবি শেখর প্রায় চার মাস ধরে দিলশাদ গার্ডেনে এই কল সেন্টার চালাচ্ছিল। অভিযুক্ত তরুণ, কৃষ্ণ কুমার এবং সত্যম তোমরকে তিনি বেতন দিয়ে রেখেছিলেন। তাদের কমিশনও দিতেন। রবি শেখর বিবেক বিহারের বাসিন্দা এবং তার বিরুদ্ধে EOW-তে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আসামিরা এভাবে মানুষকে ফাঁদে ফেলতো
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত রবি শেখর জানিয়েছেন, পর্ন সাইটে মডেলের ভুয়া ছবি দিয়ে যৌন পরিষেবার তথ্য দিতেন। এরপর যারা তার সাথে যোগাযোগ করত তারা তার কাছ থেকে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে নিয়ে নিত। পরে তাদের যৌন সেবা দেওয়া হতো না। পুলিশকে এড়াতে তারা বিদেশি নাগরিকদের টার্গেট করত, যাতে স্থানীয় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না পায়, কিন্তু তথ্যদাতাদের তৎপরতার কারণে আসামিরা ধরা পড়ে।