পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নাকের অধিকারী ইনি। গত ১০ বছর ধরে তার এই লম্বা নাকের রেকর্ড কেউই টপকাতে পারেননি। প্রায় সাড়ে তিন ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের নাক নিয়ে জীবিত মানুষ হিসাবে গত ১০ বছর ধরে গিনেস বুক রেকর্ডে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন তুরস্কের মেহমেট ইজিরেক।
গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ নিজেদের করা এক টুইটার মাধ্যমে এই বিষয়ে জানিয়েছেন। ২০১০ সালে ৩.৪৬ ইঞ্চি বা ৮৮ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের নাক নিয়ে এই রেকর্ড করেন মেহমেট। ওই পোস্টে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১০ সালের তুরস্কের মেহমেট ইজিরেক নামক এক ব্যাক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা নাকের রেকর্ড করেন। বর্তমানে মেহমেটের বয়স ৭১ বছর। কিন্তু এখনও অবধি পৃথিবীর কোনো জীবিত মানুষ তার নাকের নাকের নাগাল পায়নি। লম্বা নাকের অধিকারী হিসাবে শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছেন তিনি। সাধারণত একজন পুরুষ মানুষের নাকের গড় দৈর্ঘ্য হয় প্রায় ৫.৫ সেন্টিমিটার। মহিলাদের নাকের গড় দৈর্ঘ্য পুরুষদের চেয়ে কিছুটা খাটো, প্রায় ৫ সেন্টিমিটার। সেই ক্ষেত্রে তুরস্ক নিবাসী মেহমেটের নাক সাধারণ মানুষের গড় নাকের চেয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি দৈর্ঘ্য যুক্ত। এছাড়াও, মানুষের নাক এমন একটি অঙ্গ যা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সামান্য হলেও দৈর্ঘ্যে বেড়ে ওঠে। পুরুষদের মধ্যে, ৩০ বছর বয়স থেকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত গড়ে, এটি ৮ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর অর্থ আরো বেশ কিছুদিন বেচেঁ থাকলে মেহমেটের নাকের দৈর্ঘ্য ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
যদিও, এই দৈর্ঘ্য নাকের অধিকারী হওয়ার কারিশমা কেবল জিনের কারণে নয়, রাইনোফাইমা নামক একটি রোগের পরিণতি। কারো দেহে এই রাইনোফাইমা থাকলে তার নাকের টিস্যুগুলির অত্যধিক হারে বৃদ্ধি পায়, যার কারণে খুব বড় দৈর্ঘ্যের নাক হয়। কখনও কখনও নাকের বৃদ্ধি অস্বাভাবিক হলেও এটি ফুলে বা বেকে যায় যার ফলে সমস্যা সৃষ্ট হয়, তবে মেহমেটের ক্ষেত্রে এই রাইনোফাইমা থাকার ফলাফল হিসাবে তার নাক দীর্ঘ, এবং বেশ তীক্ষ্ণ আকার ধারণ করেছে।
তবে পৃথিবীর জীবিতদের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা নাকের রেকর্ডটি মেহমেটের ভাগ্যে থাকলেও কিন্তু বিশ্বের সর্বকালের দীর্ঘতম নাকের খেতাব কিন্তু আছে একজন ইংরেজের ঝুলিতেই।
গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের রেকর্ড অনুযায়ী, আঠারো শতকে ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের বাসিন্দা টমাস ওয়েডার্স অধিকারী ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় নাকের। তার নাকের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় সাড়ে সাত ইঞ্চি।
প্রসঙ্গত ২৭শে অগাস্ট ১৯৫৫- লন্ডন শহরে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস নামের এই রেফারেন্স বইয়ের প্রথম সংস্করণ। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট বস্তু, সবচেয়ে দ্রুততম বস্তু, সবচেয়ে বেশী ওজনের মানুষ- এমন রেকর্ড তৈরি করা নানা ঘটনার সংকলন এই পুস্তক।