মহারাষ্ট্রের কোলহাপুর থেকে এমন এক লজ্জাজনক ঘটনা সামনে এসেছে যা প্রশ্নবিদ্ধ করবে আধুনিক সমাজ ও শিক্ষাকে। দুই তরুণীকে তাদের স্বামীরা বিয়ের পর ভার্জিনিটি টেস্ট করাতে বাধ্য করেছিল, সামনে আসছে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। এরপর এক তরুণী এই পরীক্ষা শেষে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হলে পঞ্চায়েত তাদের স্বামীদের ডিভোর্স দেওয়ার অনুমতি দেয়। মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে দুই বোনই নিজ নিজ স্বামীর বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত ও আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন।
দুই বোনই কোলহাপুরের কঞ্জরভাট সম্প্রদায়ের। দুজনেই ২০২০ সালের নভেম্বরে একই সম্প্রদায়ের দুজন পুরুষকে বিয়ে করেছিলেন। অভিযোগে নির্যাতিতা তরুণীরা জানিয়েছেন, বিয়ের পর সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী দুই বোনেরই কুমারীত্ব পরীক্ষা করা হয়। একজন বোন সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এবং অন্যজন ফেল করেছিলেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে বিবাহপূর্ব সম্পর্কের অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগকারী বোনেরা বলেন, ‘কর্নাটকের বেলগামে তাদের বিয়ে হয় এবং বিয়ের মাত্র চারদিন পরেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তাদের কথায় “আমাদের কুমারীত্ব পরীক্ষা করতে বলা হয়েছিল এবং পঞ্চম দিনে আমাদের কর্ণাটক থেকে কোলহাপুরে আমাদের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। আমাদের পরিবার শ্বশুরবাড়ির প্রতিটি চাওয়া পূরণ করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তাতেও কিছু ভালো হয়নি।”
তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারি মাসে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের উপস্থিতিতে ঘোষণা করা হয় যে আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। তাই আমরা বোনেরা সাহায্যের জন্য একটি মহিলা সমিতির কাছে গিয়েছিলাম এবং পরে আমাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগকারীর মা এই বিষয়ে সহায়তার জন্য মহারাষ্ট্র কুসংস্কার নির্মূলন সমিতির কাছে যান এবং তারপরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
কুসংস্কার নির্মূল সমিতির সুজাতা মেটা জানান, তিনি দুই বোনের স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়েরের দাবি জানিয়েছেন। কেননা তারা ওই দুটি মেয়েকেই শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে, তাই ধর্ষণের মামলা করা দরকার। মেটার মতে, মহিলাদের জন্য কুমারীত্ব পরীক্ষার মতো ঘৃণ্য এবং অশালীন কাজের জন্য এই জাতীয় সম্প্রদায় পঞ্চায়েতগুলি কে নিষেধ করার প্রয়োজন রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ স্বামী ও শ্বশুরসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এবং তদন্ত চলছে।