প্রতিদিন স্নান না করে থাকার কথা সাধারন ভাবে আমরা ভাবতেই পারি না। জ্বর হলে বা ভীষণ শীতে যদিও বা স্নান না করি তা এক কি দুই দিনের জন্যে। কিন্তু টানা ৬৭ বছর! তাও সম্ভব?
হ্যাঁ এই অসম্ভব কেই সম্ভব করেছে ইরানের ৮৭ বছরের বৃদ্ধ আমৌ হাজি (Amou Haji)। জানা গিয়েছে গত ৬৭ বছর টানা স্নান করেননি এই ব্যাক্তি। ইরানের কারমানশাহ প্রদেশের দেজগাহ নামক একটি গ্রামে বসবাস করেন আমৌ হাজি। সারাবিশ্বে এই বৃদ্ধ ‘ডার্টি ম্যান’ নামেই সুপরিচিত (Worlds Dirtiest Man)। বিশ্বের সর্বাধিক নোংরা ব্যাক্তি তিনিই। তাকে দেখতে লাগে অনেকটা বাইবেল গ্রন্থের সেই মূসার মতন যিনি সর্বদাই চিমনির ভিতরে পড়ে গিয়েছিলেন। কালি ঝুলি চেহারা। সর্বদাই সারা শরীরে ছাই ভস্ম মেখে থাকেন তিনি। গোঁফ দাড়ি তে ময়লা লেগে। সারা গায়েও একই অবস্থা।
কিন্তু কি কারণ যে এই ধরনের জীবন যাত্রা করেন হাজি? কারণ নাকি তার জলে ভীতি। তেমনটাই জানিয়েছেন ইরানের দেজগাহ গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা। তার এই গত এই ৬৭ বছর ধরে জল ব্যাবহার করে স্নান না করার আসল কারণই নাকি তিনি জলে প্রচণ্ড ভয় পান। তিনি মনে করেন জলে স্নান করলেই শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন তিনি। তাই তিনি জল ব্যাবহার করে নিজের দাড়ি গোঁফও কাটেন না। আগুন জ্বেলে পুড়িয়ে পুড়িয়ে ছোট করে নেন নিজের চুল দাড়ি।
শুধুমাত্র স্নান না করে থাকার কারণেই নয় , বিশ্বের সবচেয়ে নোংরা মানুষ (Dirty Man) শিরোপা তাকে তুলে দেওয়া হয়েছে তার খাওয়া দাওয়া নেশা ইত্যাদী আজব অভ্যাসের কারণে। তার প্রিয় খাদ্যের তালিকায় থাকে মরা পচা প্রাণী যেমন কর্কুপাইনের পচা মাংস। পশুদের ত্যাগ করা মল পুড়িয়ে একটি ধুলো মাখা পাইপে ধূমপান করতে পছন্দ করেন হাজি। ইরান প্রদেশে ভয়ঙ্কর শীতের সময় নিজেকে উষ্ণ রাখার জন্য আমৌ হাজি যুদ্ধের শিরস্ত্রাণ বা হেলমেট পরিধান করেন। কবে সেটি কুড়িয়ে পেয়েছিলেন তা তিনিই জানেন।
তিনি বেঁচে থাকার জন্য মাটির গর্ত, বা কবরের গর্ত , খোলা পরিত্যক্ত ইঁটের ভগ্নস্তূপ ইত্যাদি জায়গায় আশ্রয় নেই। প্রতিদিন জল খেতে তার সঙ্গী একটি বড় টিনের পাত্র। যা থেকে রোজ ৫ লিটার জল পান করেন।
কিন্তু কেন এমন ভাবে বাঁচেন তিনি? জানা যায় আমৌ হাজি নাকি কোনো এক দুর্ঘটনায় নিজের সকল প্রিয়জন এমনকি পরিবারকেও হারায়। তারপর থেকেই একা একা এই ভাবে বাঁচার অভ্যাস তার।