গুজরাটের সুরাটে মানবতা কে লজ্জায় ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা সামনে এসেছে। আট মাস বয়সী এক শিশুকে সেখানে গৃহপরিচারিকা এতটাই নির্মমভাবে মারধর করেছে যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আট মাসের ওই শিশু। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রবল আঘাতে তার ব্রেন হেমারেজ হয়েছে।
বাড়িতে স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরায় পরিচারিকার এই কাজটি ধরা পড়ে। শনিবার পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কোমল চান্ডেলকর নামের ওই মহিলা পরিচালিকা শিশুটিকে নির্মমভাবে মারধর করেন। শিশুটিকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে ওই মহিলাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। রান্দর থানার পরিদর্শক পিএল চৌধুরী বলেন, শিশুটির মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।
সুরাট শহরে এক দম্পতির যমজ সন্তান রয়েছে। স্বামী স্ত্রী দুজনেই কাজে যায়। সে কারণেই তিনি এই মহিলাকে বাচ্চাদের দেখাশোনার জন্য নিয়োগ করেছিলেন। তিন মাস ধরে ওই শিশুর দেখাশোনা করছিলেন ধৃত পরিচারিকা কোমল। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এই মহিলা দম্পতির জন্য শিশু দেখাশোনার কাজ করছিলেন। শিশুটির বাবা মিতেশ প্যাটেল জানান, মাত্র দুদিন আগে তিনি বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন। কারণ তাদের প্রতিবেশীরা বলেছিল, তারা যখন বাড়িতে থাকে না, তখন তাদের ঘর থেকে শিশুদের কান্নার শব্দ আসে। এরপরই বাড়িতে সিসিটিভি বসাতেই ভয়াবহ নানা দৃশ্য সামনে আসতে থাকে।
সিসিটিভি ফুটেজেই দেখা যায়, ছোট্ট শিশুকে কোলে বসিয়ে তাকে প্রবল মারধর করছেন পরিচারিকা। কখনও তার মাথা ধরে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন কখনও বা বিছানায় নিয়ে গিয়ে শিশুর মাথা ঠুকে দিচ্ছেন তিনি। এই সমস্ত ভয়াবহ দৃশ্য দেখে বাবা-মা আর সময় নষ্ট না করে তৎক্ষণাৎ বাচ্চাটিকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন। শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা করে জানা যায় আঘাতে শিশুর ব্রেন হেমারেজ রয়েছে। এরপরই কোমলের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শিশুর বাবা মিতেশ প্যাটেল।
অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশ জানতে পারে, ৫ বছর বিয়ে হলেও কোমল চান্ডেলকর নামের ওই মহিলা পরিচালিকা এখনও নিঃসন্তান। পুলিশের অনুমান, সন্তান না হওয়ায় হয়ত মানসিক অবসাদে ভুগছেন ওই মহিলা। আর অবসাদ বিনা কারণে নৃশংসের মতো করে একরত্তি ওই শিশুর ওপর আঘাত করে ওই মহিলা।