মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলা থেকে মানব পাচারের একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া এক মেয়েকে স্টেশন থেকে তুলে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। মতিনগর এলাকার কারিলায় বসবাসকারী এক নারী চার বছর ধরে এই কিশোরীকে নিজ বাড়িতে বন্দী করে রাখে। তারপর বিয়ের নামে বিক্রি করা হয়। এরই মধ্যে ওই নারীর ছেলে ও আরেক যুবক তাকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণও করে। খবর পেয়ে আলামত সংগ্রহের সময় মহিলা থানা পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে হোমে নিয়ে যায়। বর্তমানে মামলা দায়েরের সময় ওই নারীসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে মেয়েটিকে উদ্ধার করে বালাশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয়। মহিলা স্টেশন ইনচার্জ সঙ্গীতা সিং জানিয়েছেন, বাদা করিলা এলাকায় শারদা নামের এক মহিলার বাড়ির ভেতরে একটি মেয়েকে বন্দী করে রাখার খবর পেয়েছিল পুলিশ। এই মহিলার মেয়ে বাসন্তীকে মানব পাচারের একটি মামলায় সম্প্রতি মতিনগর ও জয়সিনগর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
ভাইঝি বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করেছে:
বিষয়টি মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকায় পুলিশ ওই নারীর বাড়িতে নজরদারি করে তথ্য সংগ্রহ করে। ওই বাড়িতে বহিরাগত রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া মাত্রই পুলিশ শারদার বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় বাড়িতে ভীত সন্ত্রস্ত এক কিশোরকে পাওয়া যায়। মেয়েটিকে শারদা তার ভাগ্নী বলে বিভ্রান্ত করেছিল, কিন্তু তার সন্দেহ হলে সত্যটি সামনে আসে। বিয়ের নামে বিক্রি করা হয় কিশোরীকে। পুলিশ জানিয়েছে, ১৫ বছর বয়সী ওই তরুণী বলেছিল যে শারদা তাকে বাড়িতে বন্দী করে রেখেছিল। শারদার বাড়িতে মদ নিতে আসা তার ছেলে ধন সিং ও দীপেশ নামে আরেক যুবক ভয় দেখিয়ে তাকে কয়েকবার ধর্ষণও করে। লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে সে কিছু বলতেও পারেনি।
এরই মধ্যে তাকে বিয়ের নামে টাকা নিয়ে বিক্রি করা হয়। এছাড়াও বারবার ধর্ষণের কারণে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। শারদা ও বাসন্তীর মেয়েদের তুলে আনা, বিয়ের নামে লোকজনকে কেনা-বেচা করার এবং পরে তাদের কাছ থেকে টাকা ও গয়না ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও জানায় ওই কিশোরী। পুলিশ দীপেশ, ধনসিং এবং শারদা ছাড়াও চিনাবাদাম বিক্রিকারী মহিলা মমতাকে গ্রেপ্তার করেছে, যারা কিশোরীর সাথে স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত ছিল। পুলিশ অপহরণ, ধর্ষণ, পসকো আইন, বাল্যবিবাহের বিভিন্ন ধারায় মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে।