বলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রীদের মধ্যে ভীষণ জনপ্রিয় যিনি তার নাম রেখা। সত্তরের দশকে তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশ ছোঁয়া। আজ এত যুগ পরেও তিনি বলিউডের আল্টিমেট ডিভা। রেখার সৌন্দর্য্য হোক কি ব্যাক্তিত্ব, অভিনয় দক্ষতা থেকে গ্ল্যামার তার অনুরাগীদের মনে পুরোপুরি গেঁথে রয়েছে। সৌন্দর্যের নিরিখে এই বয়সেও যেন রেখার কোনো জবাব নেই। রেখাই একমাত্র অভিনেত্রী যিনি এই বয়সেও নিজের গ্ল্যামার একবারে অটুট রাখতে পেরেছেন। কিন্তু রেখার জীবনের রহস্যও অনেক। যা ঘিরেও তার অনুরাগীদের কৌতুহল বেশ ভালো রকমই।
জমকালো কাঞ্জিভরম শাড়িতে, পিঠ পর্যন্ত খোলা চুল, কাজল পড়া গভীর চোখ, পেলব ঠোঁট, কপালে টিপ আর সিঁথিতে জ্বলজ্বল করছে টকটকে লাল সিঁদুর! কিন্তু হিন্দু বিধবা রেখা কার জন্যে সিঁথিতে সিঁদুর পড়েন? এই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসে বার বার।
এখন থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা হয়েছিলেন রেখা। ১৯৯০ সালে দিল্লির বিখ্যাত ব্যাবসায়ী এবং শিল্পপতি মুকেশ আগারওয়ালের সঙ্গে বিয়ে হয় রেখার। কিন্তু বিয়ের একবছর যেতে না যেতেই লন্ডনে থাকার সময় আত্মহত্যা করেন মুকেশ। সে সময় মুকেশ আগারওয়াল নিজের সুইসাইড নোটে লিখে যান, তাঁর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। তার পর থেকেই রেখা অবশ্য একজন বিধবা মহিলা। এরপর গুঞ্জন ছড়িয়েছিল অভিনেতা বিনোদ মেহরার সঙ্গে বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী, কিন্তু সেটা নিতান্তই গুজব!
তাহলে রেখার সিঁথির উজ্জ্বল সিঁদুর কার জন্য? নানা সময়ে রেখাকে যতবারই সাংবাদিকরা এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, তিনি জবান দিয়েছেন, ‘সিঁদুর পরাটা বেশ ফ্যাশনেবল! ভালো লাগে তাই পরেছি!’ কিন্তু আসলে কি এতটাই সহজ এই উত্তরটা ?
বলা হয় রেখা এবং অমিতাভ বচ্চনের কিংবদন্তী প্রেম কাহিনীর আড়ালেই লুকিয়ে আছে এর উত্তর? ‘ দো আঞ্জানে’-র সেটে তাদের পরিচয়… তারপরই ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে তাঁদের ভালবাসার গল্প! আমিতাভ বচ্চন কিন্তু সেই সময় জয়া বচ্চনের সাথে বিবাহিত! নিজের বিবাহিত সম্পর্ককেই প্রাধান্য দেন অমিতাভ। কিন্তু রেখার মনে থেকে যান অমিতাভ। অনেকেরই ধারণা, অমিতাভের সঙ্গে নিজের পুরনো প্রেমের সম্পর্ক ভুলতে না পেরে তাঁর নামেই সিঁথিতে সিঁদুর পড়েন আজও রেখা।
রেখার বেশ পুরোনো এক বান্ধবী দীপালি এক সাক্ষাৎকারে এ ব্যাপারে জানিয়েছিলেন, ‘রেখা এখনও অমিতাভের জন্যই মাথায় সিঁদুর পরেন।’ এই নিয়ে একটা ঘটনাও রয়েছে। নিতু কাপুর ও ঋষি কাপুরের বিয়ের অনুষ্ঠানে রেখা সিঁথিতে সিঁদুর পরে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন রেখা। অবশ্য অনেকদিন পরে হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া একটি ইন্টারভিউতে সেদিনের ঘটনা বিষয়ে রেখা বলেন, ‘আমি সেই বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে সরাসরি একটি সিনেমার শুটিং সেট থেকে সেখানে গিয়েছিলাম। আর মানুষের এই নিয়ে কি বলার আছে, বা তাদের কেমন লাগছে তা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। আমার কাছে সিঁদুর পড়া ভালোই লাগছিল। ‘
তবে রেখার জীবনী লিখেছেন যিনি সেই ইয়াসিন উসমান “রেখা-দ্য আনটোল্ড স্টোরি”তে তুলে ধরেছেন একটি চাঞ্চল্যকর দিক, রেখার সিঁথিতে এই সিঁদুর পড়ার কারণ কিন্তু অমিতাভ নন। বরং সঞ্জয় দত্ত। অবাক লাগলেও এই লেখকের দাবি ১৯৮৪ সালে “জমিন-আসমান” সিনেমায় সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে শুটিং চলার সময় নাকি তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। ওই সময় গোপনে তারা বিয়েও করেছিলেন! অবশ্য সত্যি এর মধ্যে কি!