মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে মস্তিষ্কে রক্তনালীতে বিঘ্ন ঘটে স্ট্রোক হয়। আজকাল প্রায়শঃই শোনা যায় কোনো না কোনো মানুষ আমাদের পরিচিতির মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে। হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের প্রধান কারণ। যদিও স্ট্রোক যেকোনো জায়গাতেই হতে পারে। তবু বহু মানুষের এবং কিছু গবেষণার দাবি, পৃথিবীতে যত মানুষ স্ট্রোকের কারণে মারা গেছেন বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই এর শিকার হয়েছেন বাথরুমে থাকার সময়। মানুষের মধ্যে প্রচলিত এই মত ‘কিছুটা ঠিক’ হলেও কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্ট্রোক সংক্রান্ত গাইডলাইনে এ বিষয়ে কিছুর উল্লেখ নেই।
এর কারণ কি?
বহু মানুষের স্ট্রোক হঠাৎই বাথরুমেই বেশি হয়ে থাকে কারন অভ্যাস অনুযায়ী স্নান করার সময় বাথরুমে ঢুকে বেশিরভাগ মানুষই প্রথমে নিজের মাথা এবং চুল ভেজায়। এটি করা উচিৎ নয়। এটি স্নান শুরু করার ভুল পদ্ধতি। কানাডার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এইভাবে স্নানের শুরুতেই মাথায় জল দিলে রক্ত দ্রুত মাথায় উঠে যায় এবং কৈশিক ও ধমনী একত্রে ছিড়ে যেতে পারে। যার কারণে মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হয়।
এছাড়াও ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে গিয়ে অনেকে স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন। রাতে বা সকালে ঘুম থেকে হঠাৎ করে উঠে দাড়িয়ে বাথরুমে গেলে দাঁড়িয়ে পড়ার কারণে আপনার মস্তিষ্কে দ্রুত সঠিকভাবে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। যার ফলে আচমকা বাথরুমে গেল হতে পারে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের মতো ঘটনাও।
তাই স্নান করতে ঢুকে বা রাতে হঠাৎ বাথরুমে গিয়ে স্ট্রোকের শিকার হয়ে মৃত্যু বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
কিভাবে সতর্ক হবেন?
রাত্রি বেলা বা ভোরবেলা হঠাৎ বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলে হুটোপাটি করবেন না। আস্তে করে দাড়িয়ে এক থেকে দেড় মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ধীরে সুস্থে বাথরুমে যান।
স্নান করার সময়ে মেনে চলুন সতর্কতা:
স্নান করতে ঢুকে প্রথমে নিজের পায়ের পাতা ভেজাতে হবে। এরপর আস্তে আস্তে উপরের দিকে কাধ অবধি ভেজাতে হবে। তারপর চোখে মুখে জল দিতে হবে। সবার শেষে মাথায় জল ঢালা উচিত।
উপরের এই পদ্ধতিগুলো যাদের উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টরেল এবং মাইগ্রেনের ইত্যাদির সমস্যা আছে তাদের অবশ্যই পালন করা উচিত।