সারা বিশ্বের সমস্ত মধ্যে একটি মিল রয়েছে। সব হোটেলেরই বিছানার চাদর, বালিশ থেকে তোয়ালে সব কিছুই সাদা রঙের হয়। কিন্তু কেন এমনটা হয় বলুনতো! বেড়াতে গিয়ে বা কাজে , হোটেলে তো উঠেছেন অবশ্যই। আচ্ছা আপনি কখনো কোনো হোটেলের বিছানার চাদর বা বালিশের রং সাদার পরিবর্তে অন্য কোনো কিছু দেখেছেন কি?
আসলে এই যে পৃথিবী জুড়ে প্রায় সব হোটেলের সাদা জিনিস ব্যাবহারের পিছনেও রয়েছে এক রহস্য। চলুন জেনে নেওয়া যাক এর পেছনের আসল কাহিনী।
সময়টা নব্বয়ের দশক। সেই সময় আমেরিকার একটি হোটেল গ্রুপ যাদের নাম ওয়েস্টিন হোটেল গ্রুপ তারা তাদের হোটেলের ঘরগুলোতে সাদা বালিশ, চাদর, তোয়ালের ইত্যাদি ব্যবহার করা শুরু করে। ওই সময় ইউরোপ আর আমেরিকার বেশ কিছু নামী হোটেলে সাদা চাদর, সাদা বালিশ কভার ব্যবহারের প্রচলন ছিল। তবে ১৯৯০ সালে ওয়েস্টিন এবং শেরাটন হোটেলের ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিন হুভার-ই ওয়েস্টিন হোটেল গ্রুপের হোটেল রুম গুলিতে সাদা চাদর, বালিশ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এই পরামর্শের পেছনে কিছু যুক্তিও দিয়েছিলেন এরিন হুভার।
এরিন হুভার এর যুক্তি ছিল, সাদা রঙের জিনিস হোটেলের অতিথিদের মনে আনে এক পরিচ্ছন্নতার অনুভূতি তৈরি করে। এনে দেয় মানসিক তৃপ্তি। এরিন হুভারের যুক্তি মেনে এই রঙের ব্যবহারের ফলে ওয়েস্টিনের হোটেলগুলোর ব্যবসা অনেকটাই বেড়েও যায়। অতিথিদের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই গ্রুপের হোটেল। পরবর্তীকালে ওয়েস্টিনের হোটেলগুলো কে দেখা এই পন্থা অনুসরণ করতে শুরু করে বাকি হোটেলগুলো।
সাদা রং খুব উজ্জ্বল, এবং সাদা বেশী আলোর প্রতিফলন ঘটায়। তাই এই রঙের বেড কভার, বালিশ, পর্দা ইত্যাদি ব্যাবহারের ফলে হোটলের ঘরগুলো অনেক বেশি উজ্জ্বল বলে মনে হয়। তাছাড়া সাদা চাদর, বালিশ, পর্দা যখন ধোঁয়া হয় কোনো অন্য রং না থাকায় সব এক সাথে ধুলেও। বিভিন্ন রঙের বেড কভার একসাথে কাঁচলে এক রঙের কাপড়ের থেকে আরেকটায় রং লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এছাড়া সাদা রঙ যে দেখতেও অনেকটাই ভালো লাগে সেটাও একটা কারণ বটে। এরিন হুভারের এমন যুক্তিও মনে ধরে সকলের।
এছাড়া হোটলের ঘরগুলোর নকশা , রং অনুযায়ী প্রতিটি ঘরে আলাদা আলাদা রঙের সঙ্গে বিছানার চাদর, বালিশ বা পর্দার রং না মিললে দেখতেও খুব একটা ভাল লাগে না। তাই সাদা রঙের চাদর, বালিশ বা পর্দার কভার ইত্যাদি এই সমস্যাগুলোর সমাধান হতে পারে অনায়াসে।