আপনার ১০ বা ১১ বছরের মেয়ে এসে ধরুন আপনাকে ‘প্রেগন্যান্সি’ বা ‘অর্গাজম’ কী জিজ্ঞেস করল? এর উত্তর ভেবে রেখেছেন তো কী হবে। এমনিতেই কৌতূহলী হয়ে থাকে ছোটদের মন । যত এগিয়ে আসে পিউবার্টি বা বয়ঃসন্ধির সময়, তত তাড়াতাড়ি মন পরিণত হয়ে ওঠে। আগ্রহ বাড়ে না-জানা অনেক কিছু সম্পর্কে তার জানার। বাচ্চা আসে কোথা থেকে এই ব্যাপারে মোটামুটি সে একটা কাল্পনিক উত্তর মনে মনে তৈরি করে নেয়।
নানা ছোট-বড় তথ্যও স্কুল বা পাড়ার বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া সে মনের অন্দরে জুড়তে থাকে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে আপনার সন্তানকে সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে যৌনশিক্ষা দেওয়া। যাতে সে ভুল কোনও কাজ করে না ফেলে অকারণ কৌতুহলের বশে। আর বর্তমানে তো সমস্তটাই অনলাইনে স্কুল, টিউশন । মানে তাঁর হাতের কাছে নেটদুনিয়া । সে নিজেই জেনে যেতে পারবে আপনি না জানালেও। তাই বন্ধুত্বের হাত আপনি সবার আগে বাড়ান। উত্তর দিন ওর ছোট ছোট প্রশ্নের গুছিয়ে।
ওদের মধ্যে একটা বাড়তি কৌতুহল কাজ করে সেক্স বা যৌনতা নিয়ে বরাবরই। আর এক্ষেত্রে ওরা সবচেয়ে বেশি বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য প্রাধান্য দেয়। সেটা এড়াতে চাইলে সরাসরি কথা বলুন সন্তানের সঙ্গে। তা বলে এমন নয়, সমস্ত বিষয়ের খোলাখুলি আলোচনা করতে হবে। অন্তত ওর সামনে তুলে ধরুন যৌনতার প্রথম পাঠ নিজের মতো করে গুছিয়ে।
পিরিয়ডস নিয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকা বয়ঃসন্ধির আরেক সমস্যা। কন্যা সন্তান হলে তাঁর শরীরে পরবর্তী সময়ে কী পরিবর্তন আসতে চলেছে তাঁকে তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়তেই জানিয়ে রাখুন। যাতে সে ঘাবড়ে না যায় আপনার অনুপস্থিতিতে স্কুলে বা পড়ার ব্যাচে এই ধরনের সমস্যা হলে। এমনকী, আপনার পুত্র সন্তানকেও মেয়েদের শরীরের এমন পরিবর্তনের ব্যাপারে জানিয়ে রাখা উচিত । যাতে সে স্কুলে গিয়ে সহপাঠিনীকে কোনওভাবে এই নিয়ে প্রশ্ন না করে বা বুলি না করে কোনওভাবে তাঁর জামায় লাগা রক্তের দাগের জন্য।
অনেকেই বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে মেলামেশায় বাধা সৃষ্টি করেন ছেলেমেয়েরা বয়ঃসন্ধির দিকে গেলে। টিভি বা ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপরও কখনও নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু এগুলো সমাধান নয় মনে রাখতে হবে। এই সময় টান আসা স্বাভাবিক বিপরীত লিঙ্গের প্রতি। তাই খোলাখুলি আলোচনা করতে হবে তাদের সঙ্গে পুরো বিষয়টা নিয়ে । এমনকী, তাঁদের যৌন সংক্রমণের ফলে হওয়া নানা অসুখবিসুখ এবং HIV/AIDS সম্পর্কেও পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত।