বলা হয়, ভালোবাসা জাত, ধর্ম, ভেদাভেদ সব কিছুর উর্ধ্বে। সব ধরনের বাধা নিষেধ ভালোবাসার সামনে এসে শেষ হয়ে যায়। ভালোবাসার সামনে সামাজিক ছুতমার্গ এমনকি দম্পতির লিঙ্গও বা কি এই সমস্ত বিষয় তেমন কোন গুরুত্ব রাখে না। ঝাড়খন্ড রাজ্যের কোডারমাতেও (Jharkhand Kodarma) একই ধরনের একটি ঘটনা সামনে এসেছে। যেখানে এক মন্দিরে দুই সমকামী খুড়তুতো বোন একে অপরকে ঈশ্বর সাক্ষী রেখে বিবাহ বন্ধনে (Two Lesbian Cousins Married Each Other in Jharkhand) আবদ্ধ হয়েছে। বর্তমানে তারা পরিবারের কারণে আলাদা থেকে বসবাস করছে। যদিও ভারতবর্ষে আজও আইনত ভাবে সিদ্ধ হলেও সমকামিতাকে সামাজিক স্তরে খুব একটা ভালো ভাবে দেখা হয়না তাও এই দুজন ভয় পেতে নারাজ। খুড়তুতো এই দুই বোনের মধ্যে একজনের বয়স ২৪ এবং অন্য বোনের বয়স ২০ বছর। দুজনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিষয়ে বলতে গেলে জানা গেছে একজন স্নাতক পর্যন্ত এবং অন্যজন ইন্টার পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। জাতীয় সংবাদ মাধ্যম জী নিউজ ইন্ডিয়া-তে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
প্রসঙ্গত এই দুই খুড়তুতো বোন নিজেদের পরিবারের ভয়ে তাদের পরিচয় গোপন রাখতে বাধ্য হয়েছেন। তারা জানিয়েছে এখন তারা একে অপরের সবকিছু এবং শেষ নিশ্বাস অব্দি একসাথে থাকতে চান। যদিও আজ দুই বোনই পরিবার ও সমাজের ভয়ে নিজেদের পরিচয় গোপন করে আলাদা বসবাস করছেন, কিন্তু দুজনেই স্পষ্ট বলেছেন যে যত বাধাই আসুক না কেন, তারা সব সময় একসাথে থাকবে এবং ৫ বছর ধরে দুজনেই একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট। তাদের লেসবিয়ান দম্পতি হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিতে কোনো লজ্জা নেই।
তারা দুজনেই খুব ভালো করেই জানতেন যে ভারতেও সমকামী সম্পর্কের আইনি সুরক্ষা রয়েছে এবং তারা নিউইয়র্কের অঞ্জলি চক্রবর্তী এবং সুফি স্যান্ডেল নামের লেসবিয়ান দম্পতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাদের সম্পর্ককেও শেষ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।
প্রসঙ্গত ভারতের মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের মতে, পারস্পরিক সম্মতিতে দুই সমকামীর মধ্যে তৈরি হওয়া সম্পর্ককে কোনো রূপ অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে না। যে কোনো সাধারণ নাগরিকের মতো সমকামীদেরও একই মৌলিক অধিকার রয়েছে। মর্যাদার সাথে বাঁচার অধিকার সবার আছে। এছাড়াও ভারতবর্ষে সমকামী সম্পর্ককে আইনি সুরক্ষাও প্রদান করা হয়।