প্রচণ্ড শীতের হাত থেকে বাঁচতে আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল দুই বৃদ্ধার। উত্তর দিনাজপুর জেলার দুটি পৃথক স্থানে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে একই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম ফতেমা বেগম (৬৭) ও আইশা বেওয়া (৮০)। উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকের পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ফতেমা বেগম। আর ইটাহারের বাসিন্দা আইশা বেগম। দুজনেই বাড়িতে উনুনের সামনে বসে আগুন পোহাচ্ছিলেন। অসাবধানতাবশত শাড়িতে আগুন লেগে যাওয়ায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দুজনের। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেই দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
ফতেমা বেগমের নাতি আজিজুল হক জানান, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে বুধবার সকালে বাড়ির উঠোনে উনুন জ্বেলে আগুন পোহাচ্ছিলেন তাঁর ঠাকুমা। অসাবধনতাবশত তাঁর শাড়ির আঁচলে আগুন লেগে যায়। সেই সময় তাঁরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। কেবল বৃদ্ধ দাদু ঘরে শুয়েছিলেন। তিনি তড়িঘড়ি উঠে আসতে না পারায় ফতেমা বেগমের আঁচল থেকে আগুন পুরো শাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি প্রায় ঝলসে যান। তারপর তাঁর আর্ত চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ফতেমা বেগমের শাড়ির আগুন নেভায়। তারপর গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ফতেমা বেগমের মতোই একইভাবে মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয়েছে ইটাহারের অশীতিপর বৃদ্ধা আইশা বেগমের। তাঁর ছেলে মহম্মদ ইশাহাক আলি জানান, তাঁর বোনের শ্বশুরবাড়ি কুমিদপুরে গিয়েছিলেন আইশা। সেখানে প্রচণ্ড শীতের তাড়নায় মঙ্গলবার রাতে ঘরের মধ্যেই উনুনের সামনে বসে আগুন পোহাচ্ছিলেন তিনি। তখনই কোনভাবে অশীতিপর বৃদ্ধা আইশা বেগমের পরনের শাড়িতে আগুন ধরে যায় এবং তাঁর দেহের খানিকটা অংশ পুড়ে যায়। তারপর তাঁর চিৎকার শুনে বাড়ির অন্যান্যরা গিয়ে আগুন নেভান এবং তাঁদেরও হাতের খানিকটা অংশ পুড়ে যায়। এরপর রাতেই গুরুতর জখম আইশা বেগমকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিন সকালে হেমতাবাদ থানার পুলিশ ফতেমা বেগমের দেহ এবং ইটাহার থানার পুলিশ আইশা বেগমের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।