Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাঁর সঙ্গী! ভাইকে রক্ষা করতে তাও প্রতিবছর যমের দুয়ারে কাঁটা দেন বোন

জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাঁর সঙ্গী। সঙ্গী আর্থিক প্রতিবন্ধকতাও। তবু হার মানেননি এক মুহূর্তের জন্য। উত্তর দিনাজপুরের বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শোভা মজুমদার সফল তাঁর মনের জোরে। দু’টি হাতই প্রায় অচল, পা দিয়েই সব কাজ সারেন বছর পঁয়তাল্লিশের শোভা। কিন্তু ভাইফোঁটার দিনে সবটুকি শক্তি জুটিয়ে নিয়ে বাঁ হাতের কড়ে আঙুল দিয়েই ফোঁটা দেন ভাইয়েদের কপালে। ভিন্ন রকমের ভাইফোঁটার সাক্ষী প্রতিবছরই থাকে উত্তর দিনাজপুর জেলার ১২ নম্বর বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রাঙাপুকুর গ্রাম।

দুই হাতে জোর নেই বলে ছোটবেলা থেকেই সমস্ত কাজ পা দিয়ে করতেই অভ্যস্ত শোভা। পা দিয়েই সমস্ত আয়োজন করে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভাইদের ফোঁটা দিলেন তিনি। বাবার সামান্য রোজগারের টাকায় তিন ভাইবোনের পড়াশোনা চালানো দায়। অনটনের সংসারে অথর্ব মেয়েকে নিয়ে চিন্তা ছিল বিস্তর। কিন্তু সেই মেয়েই ঘুরে দাঁড়ানোর দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছেন। সমস্ত রকম প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর অবধি পড়াশোনা করেছেন শোভা। পেয়েছে শিক্ষকতার চাকরি।

সেই কবে থেকে আর্থিক অনটন আর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। তার মাঝেই পড়াশোনা করে এগিয়েছেন। লড়াইয়ে পিছু হটেননি কখনও। বর্তমানে রাঙাপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করেন তিনি। দৈনন্দিন জীবনের সব কাজ একা হাতে সামলাতে পারেন। রান্না করা থেকে শুরু করে পুজোর আয়োজন এমনকি স্কুলে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন পাঠনের সমস্ত বিষয়ই পা দিয়েই করেন শোভা। কিন্তু, বছরে একবার ভাইফোঁটা তিনি তার বাঁ হাতের আঙ্গুল দিয়েই দেন।

তাই প্রতিবছরের মতো এ বছরও ভাইফোঁটার আয়োজনে সকাল থেকেই বেজায় ব্যস্ত শোভা। সকাল থেকে পুজোর আয়োজন সমস্তটাই করেছেন পা দিয়েই। দুই ভাইকে ফোঁটা দিয়েছেন বাঁ হাতের করে আঙ্গুল দিয়েই।

শোভা বলেন, ‘ভগবানের আশীর্বাদে বাঁ হাতের কড়ে আঙুলে কিছুটা জোর আছে। তা দিয়েই ভাইদের ফোঁটা দিই। ভগবান হয়তো ভাইদের ফোটা দেওয়ার জন্যই বাঁ হাতের এই কড়ে আঙুলে কিছুটা হলেও জোর দিয়েছেন।’ শোভার ভাই বিকাশ মজুমদার বলেন, সারা বছর তারা এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করে থাকে। তাদের দিদি অন্যদের থেকে আলাদা। ভগবান হয়তো তাদের ফোঁটা দেওয়ার জন্যই তাদের দিদির বাম হাতের কড়ে আঙুলে কিছুটা হলেও জোর দিয়েছে। তাই অন্যান্য উৎসবের থেকে ভাইফোঁটা কিছুটা আলাদা। এর জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে থাকে এই মজুমদার পরিবার।

Related posts

করোনায় বন্ধ হওয়ার মুখে স্কুল, উপায় না পেয়ে চপ ভেজে স্কুলকে বাঁচানোয় ব্রতী প্রধান শিক্ষক

News Desk

সদ্য জন্মানো মেয়ের নাম ‘পকোড়া’! কেন ব্রিটিশ দম্পতির এই অদ্ভুত ইচ্ছা শুনলে অবাক হবেন

News Desk

মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও দেখতে জোরাজুরি স্ত্রীকে! রাজি না হওয়ায় যা করলেন স্বামী…

News Desk