একজন মানুষকে বিষাক্ত সাপ ২০০ বারেরও বেশি কামড়েছে, তবুও সে বেঁচে আছে। এই সাপের মধ্যে মাম্বা থেকে কোবরা পর্যন্ত বহু ভয়ঙ্কর সাপের নাম রয়েছে। বিশেষ বিষয় হল তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই এই সাপগুলিকে দিয়ে নিজেকে ছোবল মারিয়েছেন, যাতে প্রথম সর্বজনীন অ্যান্টি-ভেনম (এমন ওষুধ যা শরীরে যেকোনো সাপের বিষের প্রভাব দূর করতে পারে) তৈরি করা যায়।
লোকটির নাম টিম ফ্রিড। তিনি ৫৩ বছর বয়সী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর উইসকনসিন নিবাসী৷ তিনি বাড়িতে অনেক ধরনের সাপ রেখেছিলেন। সাধারণত সাপের কামড়ের প্রভাব তার ওপর পড়েনি। কিন্তু ২০০১ সালে দুটি বিষাক্ত কোবরা সাপের কামড়ে টিমের অবস্থা শোচনীয় হয়ে গেছিল।
সেই ঘটনার কথা স্মরণ করে টিম ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে বলেন- ১ ঘণ্টার মধ্যে দুটি কোবরা সাপের কামড় খেয়েছিলাম। আমি প্রায় মৃত হয়ে গেছিলাম। এটা মোটেও হাস্যকর বিষয় ছিল না। আমার শরীরে যথেষ্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল যে আমি একটি সাপের কামড় সহ্য করতে পারতাম, কিন্তু দুটি নয়। সাপের আক্রমণের পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে তিনি ৪ দিন কোমায় ছিলেন।
চেতনা ফিরে পাওয়ার পর, টিম শুধুমাত্র সাপের সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তিনি এখন ক্যালিফোর্নিয়া ভ্যাকসিনেশন রিসার্চ কোম্পানি সেন্টিভ্যাক্সের হারপেটোলজির পরিচালকের প্রধান।
গবেষণা চলাকালীন, টিম নিজেকে ২০০ বারের বেশি বিষধর সাপ দিয়ে নিজেকে ছোবল মারিয়েছেন। তিনি একটি সার্বজনীন অ্যান্টি-ভেনম তৈরি করতে চান যাতে যেকোনো সাপের কামড়ের চিকিৎসা করা যায়।
টিম আরও বলেন- যখনই সাপ কামড়ায় তখন খুব ব্যাথা করে। যেন একশত মৌমাছি এক সাথে কামড় দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা বছরে প্রায় ৫৪ লাখ মানুষকে সাপে কামড়ায়। এর মধ্যে ৮১,০০০ থেকে ১,৩৮,০০০ মানুষ মারা যায়।
২০২০ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, সাপের কামড়ে ভারতে ১.২ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে। মানে প্রতি বছর গড়ে ৫৮,০০০ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে এক চতুর্থাংশের বয়স ছিল ১৫ বছরের কম। টিম বলেছিলেন যে এই পরিসংখ্যানগুলির কারণে, আমাদের কাজ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।