যদি পৃথিবীর উপজাতির সংখ্যা গোনা হয় তবে প্রায় কয়েক বছর লেগে যাবে কারণ প্রচুর উপজাতি রয়েছে পৃথিবীতে। এমনও অনেক উপজাতি আছে যার কোনও হদিশ নেই আমাদের। এখনও তাদের মধ্যে অনেকেই জঙ্গলে বাস করেন আবার অনেকে এমন আছেন যারা শহরে চলে গিয়েছেন। সাধারণত আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো হয়না এই উপজাতি গুলি, কারণ কিছু স্বভাব বা রীতিনীতি আলাদা থাকে। বিভিন্ন কারণে তারা সব সময় আলোচনায় থাকে। অদ্ভুত ঐতিহ্য বহন করে তারা। আজ বাংলাদেশের এক উপজাতি নিয়ে আলোচনা করছি। এই উপজাতি প্রায় কয়েক শতাব্দি ধরে এক অদ্ভুত প্রথা মেনে আসছে, যা শুনলে আপনিও হতবাক হবেন। এই উপজাতির পুরুষেরা যে কন্যার জন্মদেন তারা যখন বড় হয় তখন তাদেরই বিবাহ করেন।
বাংলাদেশের উপজাতি মান্ডি, এই মান্ডি উপজাতির কথাই বলা হচ্ছে। একটি অদ্ভুত ঐতিহ্য আছে এই উপজাতির। এখানে, যদি খুব অল্প বয়সে একজন পুরুষ বিধবা কোনো নারীকে বিয়ে করে, আর যদি তার কোনো কন্যা সন্তান থেকে থাকে তাহলে সিদ্ধান্ত হয় যে পরবর্তীতে ওই নারীর মেয়েকে ওই ব্যক্তি বিয়ে করবে। এ জন্য মহিলার প্রথম বিয়ে থেকে কন্যা সন্তান থাকলে এই প্রথার শিকার হতে হয় তাকে। ছোট বেলার থেকে যে মানুষটিকে মেয়েটি বাবা বলে ডেকে আসছে তাকেই পরবর্তীতে নিজের স্বামী রূপে গ্রহণ করতে হয়। এই প্রথা এই যুগের নয়। কয়েক শতাব্দী ধরে চলে আসছে এই প্রথা।
সৎ বাবা বিয়ে করেন:
সব থেকে বড় কথা এই কুপ্রথার জন্য সব সময় সৎ বাবা যে হবে তাঁর সাথেই বিয়ে করতে হবে সেই কন্যা সন্তান কে। নিজের বাবা কখনই এই প্রথার সাথে যুক্ত হতে পারবেন না। যখন এখানকার একজন মহিলা অল্প বয়সে বিধবা হন তখন এই কুপ্রথা শুরু হয়। এরপর তাকে অন্য কোনও দ্বিতীয় ব্যক্তি এই শর্তে বিয়ে করবে যে প্রথম বিয়ের থেকে তার কোনও কন্যা সন্তান থাকলে সে তাকে ভবিষ্যতে বিয়ে করবে। এই কুপ্রথার স্বপক্ষে যুক্তি যে একজন যুবক স্বামী দীর্ঘ সময়ের জন্য রক্ষা করতে পারে তার স্ত্রী এবং কন্যা উভয়কেই। এই কুপ্রথা আজও বিশ্বাস করা হয়।
অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট হয়:
মান্ডি উপজাতির অনেক মেয়ের জীবন এই অপকর্মের কারণে নরকে পরিণত হয়েছে। মান্ডি উপজাতির এক নারী ওরোলা তাদের কাহিনী বলতে গিয়ে অনেক চমকপ্রদ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে খুব ছোটবেলায় তিনি তার বাবাকে হারিয়েছিলেন। এরপর নোটেন নামের একজনকে তার মা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তার অন্য বাবাকে ওরলা খুব পছন্দ করতেন। খুব যত্নও নিতেন তাঁর। কিন্তু যেই সে বড় হল আর সেসময় এই প্রথার কথা শোনা সে আর তাঁরপর হতবাক হয়ে যায় । তিনি এও জানান যে তার বয়স যখন তিন বছর ছিল তখন নোটেনকে বিয়ে করেছিলেন তার মা। প্রথমে তিনি তার বাবা ছিলেন, এখন তাঁর স্বামী হয়েছেন। এটা মেনে নেওয়া একপ্রকার অসম্ভব ছিল তাঁর পক্ষে, আর এই কারণে অনেকের জীবন নস্ট হয়েছে।