কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর জন্যে অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ রেমডিসিভিরের (Remdesivir) খোঁজ মিলছে না বাজারে। এই ওষুধের আকালে বহু রোগীর পরিবার পড়েছে মহা বিপদে। আর এই দুর্দিনের সুযোগ নিয়েই কালোবাজারি করছে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। বেশ অনেক দিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল রেমডিসিভির কালোবাজারির। কেমিস্টের দোকানে বা হাসপাতালেও না-মিললেও, রেমডিসিভির ব্ল্যাক মার্কেটিং হচ্ছে চড়া দামে। সেই চক্রের খোঁজে তৎপর হয়েছিল কলকাতা পুলিশ। অবশেষে কলকাতা পুলিশের জালে ধরা পড়ল রেমডিসিভির ব্ল্যাক মার্কেটিং-এর তিন পান্ডা।
বুধবার গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দারা দু’জনকে ডায়মন্ড হারবার রোড এবং আরও একজনকে হেস্টিংস থেকে গ্রেফতার করেছেন। রেমডিসিভির কোভিডের চিকিৎসায় মুমূর্ষু রোগীকে দেওয়া হয়ে থাকে। সে কারণে এই টাল মাতাল পরিস্থিতিতে রেমডিসিভির ওষুধের চাহিদা রয়েছে উর্দ্ধে। ওষুধের জোগান যাতে স্বাভাবিক থাকে তার জন্যে চেস্টা করছে প্রশাসন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন বাজারে এক একটি রেমডিসিভির ইঞ্জেকশনের ভায়াল কিনতে গেলে মোটামুটি দাম পড়ে ২৭০০ টাকার কাছাকাছি। ব্র্যান্ড অনুযায়ী রেমডিসিভিরের দামে সামান্য পার্থক্য ঘটে। তবে দেশের বিভিন্ন জায়গার মতোই পশ্চিমবঙ্গেও রেমডিসিভিরের সঙ্কট চলছে।
গড়িয়াহাটের এক বাসিন্দা শঙ্কর সিং- এর বাড়ির লোকের করোনা চিকিৎসার জন্য রেমডিসিভির ওষুধটির প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু তিনি তা কোথাও পাচ্ছিলেন না। একটি সূত্রে তিনি ওষুধের খোঁজ পান। তিনি যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁরা রেমডিসিভিরের একটি ভায়ালের জন্যে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। শঙ্কর সিং পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা। এর পর ঘটনায় অভিযুক্ত সাহাপুরের ইন্দ্রজিৎ হাজারা আর কসবার বাসিন্দা রাজকুমার চৌধুরীকে ডায়মন্ড হারবার রোড থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদের কে জেরা করে আরও কয়েকজনের নাম জানতে পারেন গোয়েন্দারা। তার পরে হেস্টিংস থানার অন্দরে চ্যাপেল রোডের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় পুলিশ। সেই ফ্ল্যাটে মেলে ১০০ গ্রামের ১২০টি ভায়ালের রেমডিসিভির ওষুধ। গ্রেপ্তার হয় দেবব্রত সাউ নামের এক অভিযুক্তকে। এই ৩ জনকে জেরা করে আরও ১২ ভায়াল রেমডিসিভির উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযান এখনও জারি রেখেছে পুলিশ।