ছেলে কি তবে মা বাবার হাতেই খুন হল? এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ মিলল এক দোকানের ভিতর থেকেই । খুনে অভিযোগ তোলা হয়েছে ওই যুবকের মা বাবার উপরেই। এরপর স্থানীয়রা ওই যুবকের মা বাবা কে বেধড়ক মারধর করেন। এই ঘটনা নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোবর্ধনপুরে (Gobordhanpur) বিরাট এক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ কোনওমতে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলেও এখনও ওই এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে।
প্রতিবেশীদের থেকে জানা যাচ্ছে যে , খুন হওয়া ওই যুবক বছর ১৮ এর শুভময় মাইতি। সে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার,গোবর্ধনপুরের বাসিন্দা। আজ, সোমবার সকালে শুভময়ের আত্মঘাতী হওয়া দেহ উদ্ধার করা হল এক দোকানের ভিতর থেকে। আর সেখানেই ছিলেন শুভময়ের মা যিনি কান্নাকাটি করছিলেন। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে যে শুভময় কে খুন করা হয়েছে। দোকানের শাটার তখন বন্ধ ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই সন্দেহ হয় যে ছেলের দেহ বন্ধ দোকানের ভিতর রয়েছে তা জানল কী করে ওই মহিলা? তাঁদেরকে মারধর করা হয়েছে সন্দেহের জেরে।
তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। গণধোলাই দেয় উত্তেজিত জনতা ওই নিহত যুবকের মা ও বাবাকে। বেশ অনেকক্ষন জিজ্ঞাসাবাদ চলে ওই গৃহবধুকে আটক করে। এই খবরে শখের বাজার এলাকায় প্রচুর লোক জড়ো হতে থাকে। গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানায় খবর যায়। থানার ওসি অজয় চন্দ সঙ্গে সঙ্গে সেখানে উপস্থিত হন। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা পুলিশ পৌঁছাতেই। বিক্ষোভ চলতে থাকে পুলিশকে ঘিরে।
স্থানীয় দের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী , পেশায় অটো চালক ছিলেন শুভময় মাইতি। নিজের বাড়ির এলাকাতেই অটো চালাতেন তিনি। এলাকার একটি নাবালিকার, শুভময়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়। বিষয়টি ওই নাবালিকার মা-বাবা জানতে পারলে ছেলেটিকে ডেকে চরম অপমান করেন তারা। এমনকি গায়ে হাত তুলতেও এগিয়ে আসে তারা। শুভময়ের বাড়িতে খবর পাঠানো হয় । যাতে আর কখনও শুভময় এরকম কাজ না করে তার জন্যে আরও কথা শোনানো হয় শুভময়ের বাবা-মাকেও। পুলিশ সূত্রে খবর, ছেলের সঙ্গে বাবা-মায়ের এই বিষয়টি নিয়ে বিবাদ তৈরী হয় রবিবার। শুভময়ের গায়ে হাত তোলেন তাঁর বাবা-মা সেই সময়ই। ছেলেকে মারধর করার সময় শুভময়ের গুরুতর আঘাত লেগে যায়। গ্রামবাসীরা মনে করছে যে ছেলে মারা গিয়েছে, মারধরের কারণে। এরপর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রমাণ লোপাটে। সেই সময়ই কোনওভাবে মৃত্যু হয় শুভময়ের বলে পুলিশেরও অনুমান। অভিযুক্ত বাবা গৌরহরি মাইতি এবং সৎ মা কাজল মাইতি।
বিশাল পুলিশবাহিনী এই ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পৌছায় । ওই এলাকায় বর্তমানে চলছে রুট মার্চ। মৃতদেহ ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে। ওই যুবকের বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে।