বেশ কয়েক মাস আগেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন যে করোনার অন্তিম দিনের শুরু হয়ে গেছে। যদিও বছরের শেষ দিকে করোনার সংক্রমণ কম হলেও এই নয়া প্রজাতি ওমিক্রনের সংক্রমণ সংখ্যা বেশি। ওমিক্রনই একমাত্র করোনার তৃতীয় ঢেউ ডেকে আনতে পারে , বিজ্ঞানীদের এমনটাই ধারণা। তাদের মতে আগামী বছরে ফেব্রুয়ারী মাসেই তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে।
এই পূর্বাভাস দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা মহামারির সময়কাল গণনার জন্য তৈরি সূত্র মডেল (Sutra Model) অনুসারেই। মণীন্দ্র আগরওয়াল ও এম বিদ্যাসাগর এই মডেলের আবিস্কারকর্তা জানান, করোনার নতুন একটি ঢেউ আগামী বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে আছড়ে পড়তে পারে। তবে সংক্রমণের হারও সামান্যই হবে এটি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারবে না।
দুই বিজ্ঞানী সূত্র মডেলের আবিস্কারকর্তা বলেন, “ ফেব্রুয়রি মাসে খুব খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হলে, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১.৫ লাখ থেকে ১.৮ লাখ হতে পারে। তাও তখনই এটা সম্ভব, যদি সম্পূর্ণরূপে টিকা বা পূর্ব সংক্রমণ থেকে তৈরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সম্পূর্ণরূপে ফাঁকি দেয় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট।”
ভারতে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরিস্থিতিই হবে:
বিজ্ঞানীদের মতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যেভাবে এই ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুতগতিতে যেমন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে, তেমনই সংক্রমণের শীর্ষে আবার পৌঁছিয়ে, সেখান থেকে সংক্রমণ নিম্নমুখী হবে বিনা বাধায়। যেমন তিন সপ্তাহেই দক্ষিণ আফ্রিকায় সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছেছে এবং আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও তারপরই ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল গত ১৫ ডিসেম্বর ২৩ হাজারের কাছাকাছি, এরপরই ২০ হাজারের নীচে নেমে আসে সংক্রমণ। যদিও এখনও বেশি মৃত্যুর হার, কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যা নিয়ে।
আইআইটির অধ্যাপকদের মতে, যেহেতু ভৌগলিক ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় মিল রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের মধ্যে, ভারতে দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রমণের প্রতিফলনই দেখা যেতে পারে সেই কারণে। সুতরাং উদ্বেগ তৈরি হলেও সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে, সংক্রমণের এই নতুন ঢেউ যে দীর্ঘস্থায়ী হবে না, তা বোঝাই যায়।
তবে এখনও অজানাই রয়ে গিয়েছে একটি বিষয়। টিকাপ্রাপ্ত মানুষেরা যে হারে ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে প্রশ্ন উঠছে, কতটা ফাঁকি দিতে সক্ষম এই ভ্যারিয়েন্ট সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা টিকার মাধ্যমে প্রাপ্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে।