বিয়ের কি কোনো বয়স হয়? মোটেই না। নিজের সাথী খুজেঁ নেওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় থাকতে পারে না। সমাজ, বয়স ইত্যাদির বেড়াজাল পেরিয়ে একেবারে অন্য রকমের এক বিয়ের সাক্ষী থাকল মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলার এলাকার মানুষেরা। অবশ্য এই বিয়ের ক্ষেত্রে সমাজ বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। উল্টে এক ঊনআশি বছরের প্রৌঢ় যার নাম দাদাসাহেব সালুঙ্খে তার বিয়ে নিয়ে মেতে উঠলেন সকলে৷ বরের বয়স ৭৯ তো কি? বিয়ে বলে কথা। মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলার মিরাজে অবস্থিত এক সহায় সম্বলহীন, আর মাথার উপরে ছাদ নেই এমন মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট এক কেন্দ্রে এই বৃদ্ধর বিয়ের অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়৷ ঊনআশি বছর বয়সী পাত্রের কনে ছিলেন ছেষট্টি বছর বয়সি শালিনী। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দাদাসাহেব সালুঙ্খে এবং শালিনীদেবী একে অপরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
কনে মহারাষ্ট্রেরই সাংলি জেলার মিরাজের গৃহহীন কেন্দ্রে বসবাস করতেন ৬৬ বছর বয়সি শালিনীদেবী। শালিনী দেবী নিজের স্বামী এবং ছেলে মেয়েদের অকালে চলে যাওয়ার পর থেকেই তিনি এই কেন্দ্রে বসবাস করেন। দীর্ঘদিন একাকী নিজের জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।
ওপর দিকে পাত্র দাদাসাহেব সালুঙ্খেও নিজের জীবনে বেশ একা। স্ত্রী নেই। সন্তানরা বিয়ে শাদী করে নিজেদের সংসার আর জীবন ঘিরে ব্যস্ত হয়ে পড়েন৷ সন্তান বা নাতি নাতনী যে যার মতো ব্যাস্ত থাকায় দাদাসাহেব সালুঙ্খে একাকীত্বে কাটাচ্ছিলেন নিজের জীবন। বৃদ্ধ বয়সে এক সঙ্গীর অভাব বোধ করছিলেন তিনি। বাবার এককীত্ব দূর করতে তার বিয়ের সিদ্ধান্তে সম্মতি জানান সন্তানরা। দাদাসাহেব সালুঙ্খের সন্ধান পান আরও এক একাকী মহিলা শালিনীদেবী যে সহায় সম্বলহীন।
এমন বিয়ের প্রস্তাবে শুরুর দিকে কিছুটা দ্বিধাবোধ করেছিলেন শালিনীদেবী৷ গৃহহীন মহিলাদের আশ্রয় স্থলের অন্যান্য আবাসিকরা তাকে তার সামনের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা বোঝান৷ এতে কিছুটা সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।সমস্ত আইনি রীতি নীতি সম্পন্ন করার পর, মারাঠি বিয়ের প্রথা অনুসরণ করে মালা বদল হয় এবং বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বিয়ের সময়, আমন্ত্রিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং পুরো মিরাজ গ্রাম নবদম্পতি কে সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য আশীর্বাদ করেছেন আর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।