নারদা মামলায় ফিরহাদ, সুব্রত, শোভন, মদন এই চারজন নেতা কি জেল হেফাজত থেকে জামিন পাবেন, সিবিআই কি এই মামলাটি অন্য রাজ্যে নিয়ে চলে যাবে? হাইকোর্টে দিনভর শুনানির শেষেও মিলল না জবাব। আপাতত চার নেতার জামিনে স্থগিতাদেশই জারি থাকল। ফলে আপাতত প্রেসিডেন্সি জেলেই থাকতে হচ্ছে এই সমস্ত হেভীওয়েট নেতাদের। শারীরিক অসুস্থ এই যুক্তি দেখিয়েও অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মিলল না শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মদন মিত্রের। আগামিকাল মানে বৃহস্পতিবার আবারও মামলার শুনানি শুরু হবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এজলাসে।
সারাদিন, যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তিতে একে-অপরকে ছাড়লো না কোনও পক্ষই। নারদা মামলায় প্রায় ২.৫ ঘণ্টা ধরে ভার্চুয়ালি শুনানি চলল হাইকোর্টে। নারদা কাণ্ডের ধৃতদের হয়ে হাইকোর্টে সওয়াল করলেন অভিষেক মনু সিংভি ও সিদ্ধার্থ লুথরা, আর সিবিআইয়ের পক্ষে সওয়াল করলেন তুষার মেহতা ও ওয়াই জে দস্তুর।
ঠিক কি রকম ছিল শুনানি পর্ব? হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সামনে বলতে উঠে নারদা মামলায় তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন তুষার মেহতা ও ওয়াই জে দস্তুর। বিচারপতির পাল্টা জিজ্ঞেস করেন যে, ‘করোনার আবহে অভিযুক্তদের কি এখন জেলে রাখার কোনও প্রয়োজন আছে? অভিযুক্ত যারা তারা তদন্তে অসহযোগিতা করছেন কি? এমন কোনও অভিযোগ আছে? জবাবে সিবিআই পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহতা বলেন, ‘অভিযুক্তেরা প্রেসিডেন্সি জেলে নেই, হাসপাতালে আছেন’? উল্লেখ্য, একমাত্র ফিরহাদ হাকিমই এখন সংশোধানাগারে রয়েছেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায় ভর্তি হাসপাতালে। এমনকি, এদিন শারীরিক অসুস্থতার কারণে মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায় কে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল হাইকোর্টে। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত দের তরফের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, অভিযুক্তদের কিছু না জানিয়ে ফের মামলা দায়ের করা হয়। নানা উপায়ে তাঁদের জেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পাল্টা সিবিআই পক্ষের আইনজীবী নিজাম প্যালেসে মুখ্যমন্ত্রীর পৌঁছে যাওয়া এবং বিক্ষোভের প্রসঙ্গ টেনে আনে। বলেন, ‘গ্রেফতারির পর যে ভাবে বিক্ষোভ হয়েছে, তা নজিরবিহীন। সেদিনের ঘটনা নজিরবিহীন। সিবিআই অফিসাররা দফতরের বাইরে বেরোতে পারেননি। বিশাল জমায়েত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ধর্ণায় বসেছিলেন। এমনকী, আইনমন্ত্রীও আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন’।
এটা বিচারব্যবস্থার উপর চাপ তৈরি করার কৌশল। অভিযুক্তদের ভার্চুয়ালি আদালতে পেশ করতে হয়েছিল। এত বেশি জমায়েত ছিল।
বহুক্ষুন ধরে শুনানি চলার পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা কি আগামীকাল শুনানি করতে পারি?’ কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল বলেন, অভিযুক্তরা যেহেতু হাসপাতালেই রয়েছেন। ফলে আগামীকাল শুনানি হতে পারে।
তাই শুনানি আপাতত বৃহস্পতিবার অবধি মুলতবি থাকলো।