কথায় আছে , কুসন্তান যদি বা হয়, কুমাতা কখনও নয়। বলা হয় মায়ের থেকে বেশি ভাল এই পৃথিবীতে আর কেউই বাসতে পারে না। মা মা-ই হয়। সন্তানের ভালর জন্য সে করতে পারে না এমন কোনও কাজ নেই। যেকোনও বিপদের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারে একজন মা, শুধুমাত্র তাঁর সন্তানকে রক্ষা করার জন্য। সন্তান মায়ের নাড়ি ছেঁড়া ধন। কিন্তু এই কথা সব সময় সত্যি হয় না। কখনো কখনো মায়ের কীর্তি দেখলে অবাক হতে হয়। এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকলো ছত্তীসগঢ় যেখানে শিশুকন্যা হওয়ায় ফেলে দিয়ে গিয়েছিলেন মা।
কিন্তু এই ঘটনার এখানেই শেষ নয়, সেই মানব শিশুকন্যা কে নিজের ছানাদের সাথে ‘পরম স্নেহে’ তাকে রাতভর আগলে রাখল আর এক মা। সে একটি কুকুর। যে ঘটনায় বিস্মিত গোটা গ্রাম। ছত্তীসগঢ়ের মুঙ্গেলী জেলার সরিসতাল গ্রামের ঘটনা।
সকালে মাঠের ধারে ঝোপের মধ্যে থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ পেয়েছিলেন গ্রামবাসীদের কয়েক জন। সেই আওয়াজ অনুসরণ করে ঝোপের কাছে পৌঁছতেই চমকে ওঠেন তাঁরা। সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় শুয়েছিল শিশুটি। তখনও নাড়ি জুড়ে ছিল সদ্যোজাতের দেহে। শিশুটিকে দেখে যত না অবাক হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা, তার থেকে বেশি বিস্মিত হয়েছিলেন পাশে প্রহরী হয়ে বসে থাকা একটি মা কুকুরের ভূমিকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওই ঝোপের মধ্যেই একটি কুকুরের বাচ্চা হয়েছিল। সেই বাচ্চাগুলির পাশেই শোয়ানো শিশুটি। আর তার পাশেই অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে ছিল আর এক মা। নিজের সন্তানদের যে ভাবে আগলে রাখে সে, ঠিক সে ভাবেই মানবশিশুকে যেন আগলে রেখেছিল কুকুরটি। আরও আশ্চর্যের, শিশুটির দেহে একটি আঁচড় পর্যন্ত লাগতে দেয়নি সে।
স্থানীয়রা তখন পুলিশে খবর দেন। সরিসতাল গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্য মুন্নালাল পটেল এক সর্বাভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা কাজের জন্য বেরিয়েছিলাম। তখন সকাল ১১টা। হঠাৎই মাঠের ধারে এক শিশুর কান্নার আওয়াজ পেয়ে সেখানে যাই। গিয়ে দেখি একটি সদ্যোজাত শিশুকন্যা কুকুরের পাশে শুয়ে। মা কুকুর এবং তার বাচ্চাও ছিল সেখানে। রাতভর শিশুটিকে আগলে রেখেছিল কুকুরটি। আমরা পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরকে খবর দিই। ওরা এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে।