Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং

লটারিতে ৪০ লক্ষ টাকা পেতে ১৭ লক্ষ খুইয়ে সর্বস্বান্ত! মর্মান্তিক পরিণতির শিকার প্রৌঢ়

সারাদেশের মতন এই বাংলার বুকে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে অনলাইন প্রতারণার ফাঁদ। আর সেই ফাঁদের বলি হলেন এবার এক প্রৌঢ়। প্রতারণার ফাঁদ যে কতদূর প্রসারিত সেই আন্দাজ ছিল না এই ব্যক্তির। যার কারনে চরম পথ বেছে নেওয়ার আগে সর্বস্বান্ত হয়েছেন তিনি।

পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা শ্রীকান্ত ওঝা। একদিন তার কাছে একটি ফোন আসে যাতে বলা হয় তিনি নাকি লটারি তে ৪০ লক্ষ টাকা জিতে গেছেন। এত কিছু না বোঝা ওই ব্যক্তি ফোনের বিষয়টি সত্যি বলে ধরে নেন। ভাবেন সত্যিই টাকা জিতেছেন তিনি। তবে ফোনের ওপার থেকে বলা হয় এই টাকা পেতে গেলে তাকে আয়কর বাবদ দিতে হবে দেড় লক্ষ টাকা। সেটাকে সত্যি বলে মেনে নেন তিনি। দিয়ে দেন দেড় লক্ষ টাকা। তারপর থেকেই শুরু নানা অজুহাতে টালবাহানা করে ওনার কাছ থেকে টাকা চেয়ে বসে লটারির ফাঁদ পাতা প্রতারকের দল। ওনাকে বোঝাতে থাকেন ওনার ৪০ লক্ষ টাকা আছে শুধু পেতে ওনাকে আরো কিছু টাকা দিতে হবে। আর ক্রমশই সেই জালে জড়িয়ে পড়ে সেই ব্যক্তি। খালি ভাবতে থাকেন টাকা এসে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। বাড়ির লোককেও কিছু জানাননি, ভেবেছিলেন সবাইকে চমকে দেবেন। সেই টাকা দিয়ে দেবেন মেয়ের বিয়ে, ছেলের একটা ব্যবসার ব্যাবস্থা করে দেবেন। লটারির টাকা পেলে পরিবারের ভবিষ্যত ভালো হবে।

এইভাবে ৪০ লক্ষ টাকার আশায় পাঁচ বছরে বেরিয়ে গেছে ১৭ লক্ষ টাকা। প্রৌঢ় ততদিনে বুঝতে পেরেছেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। টাকা দিতে গিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছে তার সব সঞ্চয়, বাজারে হয়ে গেছে অনেক ধার দেনা। বিক্রি করে দিয়েছেন জমি। বুঝতে পারেন ভবিষ্যৎ গড়ার জায়গায় পরিবার স্ত্রী ছেলে-মেয়ে কে তিনি পথে বসিয়ে দিয়েছেন। এর কারণে চরম পথ বেছে নিলেন ৫৫ বছর বয়সী শ্রীকান্ত ওঝা।

পুলিশ সূত্রের অনুযায়ী পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা থানার মশাগাঁ গ্রামে তার বসত বাড়ির পাশের একটি গাছ থেকে লাইলন দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে শ্রীকান্ত ওঝার দেহ। পাওয়া গেছে একটি সুইসাইড নোটও। সেই সুইসাইড নোটে পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা আছে কিভাবে তিনি প্রতারিত হয়েছেন।

জানা গেছে প্রতারকরা ফোন পে, গুগুল পে এমনকি পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের কলকাতার একটি ব্রাঞ্চে টাকা নিয়েছেন তাঁর থেকে। সেই সব নাম্বার এবং অ্যাকাউন্টের সব তথ্য নিজের সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন তিনি। পুলিশ এই সুইসাইড নোটের তথ্য প্রমাণ সহ তদন্তে নেমেছে বলে জানা গিয়েছে।

জানা গেছে শ্রীকান্ত বাবু তাঁর সুইসাইড নোটে লিখেছেন, বাংলার অন্য কোনও মানুষের যাতে এমন অবস্থা না হয়। ‘ওদের প্রতারণা বিষয়ে বুঝতে পারার পর যখন আমি ওদের বিরুদ্ধে আইনের সাহায্য নেওয়ার কথা বলেছিলাম তখন ওরা আমাকে বলেছিল, এই রাজ্যে থেকেই এই কাজ করছি। কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না।’ তিনি হাল ছেড়ে নিঃস্ব হয়ে গেলেও কাউকে কিছু বুঝতে দেননি অবশেষে আত্মহননের পথ বেছে নেন।

কাঁথি-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে বেশ অনেকদিন ধরে সামনে আসছে নানা সক্রিয় অনলাইন প্রতারণার চক্র। কিন্তু গ্রামের কোনো অঞ্চলে এইভাবে সাইবার ক্রাইমের কারণে একেবারে মৃত্যুর নজির সেভাবে এর আগে নজরে আসেনি। এই ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

Related posts

স্ত্রীর ইচ্ছাতেই অন্য পুরুষের সাথে স্ত্রীর যৌনতার ভিডিও রেকর্ড করত স্বামী! হত আপলোড

News Desk

তাঁর স্ত্রী হতে হলে পূরণ করতেই হবে এই অদ্ভুত শর্ত, না হলেই ডিভোর্স! শো হোস্টের বক্তব্যে চাঞ্চল্য

News Desk

বেঁচে থাকতে তাঁদের প্রেমের সম্পর্কে মত ছিল না পরিবারের, মৃত্যুর পর বিয়ে দিল পরিবারের লোক

News Desk