Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

দক্ষিন কলকাতার ফুসফুস রবীন্দ্র সরোবর বা ঢাকুরিয়া লেক! এর অজানা তথ্যগুলি জানেন?

ইট পাথরে ঘেরা ব্যাস্ত কলকাতা শহরের মাঝে সবুজ শীতল বাতাসে শ্বাস নেয়ার অন্যতম জায়গা রবীন্দ্র সরোবর লেক। সবুজ গাছপালার পাশাপাশি যেখানে রয়েছে শীতল জলের এক মনোরম লেক।

এই লেকের নাম অনুযায়ী গোটা এলাকারই নাম রবীন্দ্র সরোবর। হ্রদের উত্তর দিক দিয়ে চলে গেছে কলকাতার সাউদার্ন অ্যাভিনিউ। কলকাতার সুন্দরতম পথ। এই মনোরম পথের সবুজ গাছগাছালি ছুঁয়ে রাখে এ-ওকে। এমন মনোরম প্রকৃতির মাঝে জলের আমেজ নিয়ে লেকের উপর দিয়ে বয়ে চলে হাওয়া। হ্রদের পিছনদিকে দক্ষিণ কলকাতার লেক গার্ডেন স্টেশন।

রবীন্দ্র সরোবর লেক একটি কৃত্রিম হ্রদ। স্বাধীনতার আগে কলকাতার পরিবেশ উন্নত করার উদ্দেশ্যে ১৯২০ সাল নাগাদ পদক্ষেপ গ্রহণ করে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)। সেই সংস্থা প্রায় ১৯২ একর জলা জমি কে অধিগ্রহণ করেন। সম্পূর্ণ জলাজমি টিকেই বসবাস যোগ্য করে তোলা ছিল তাঁদের অন্যতম উদ্দেশ্য। ফলে রাস্তাঘাট তৈরি, জমি উচু করে সমতল করা এবং হ্রদ ও নানা উদ্যান নির্মাণ করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। এই সময়ই এই অঞ্চলে শুরু হয় একটি বিশাল হৃদ খননের কাজ। বৃহদাকার হ্রদের নাম রাখা হয় ঢাকুরিয়া লেক। এরপর স্বাধীনতার পরে ১৯৫৮ সাল নাগাদ কেআইটির এই লেকের নাম ঢাকুরিয়া লেক থেকে পরিবর্তন করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে নাম দেওয়া হয় রবীন্দ্র সরোবর। এই হ্রদটিকে কেন্দ্র করে আস্তে আস্তে তৈরী হয় বাচ্চাদের পার্ক, বাগান, প্রেক্ষাগৃহ ইত্যাদি নানা সংস্কৃতি এবং বিনোদনকেন্দ্র। পাশে গড়ে ওঠে নজরুলমঞ্চও। এবং একটি স্টেডিয়ামও। ২০০৩ সালে লেকটিকে সংরক্ষণ প্রকল্পে যুক্ত হয় রবীন্দ্র সরোবরের নাম। সম্প্রতি নগরোন্নয়ন দফতরের তরফ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে এই লেকটির সৌন্দর্যায়ন এর উদেশ্যে। রবীন্দ্র সরোবর ও স্টেডিয়ামের মাঝে স্থাপিত হয়েছে রবি ঠাকুরের মূর্তি।

প্রায় একশ বছরের পুরোনো বেশ কিছু গাছপালা রয়েছে এই লেকের চার পাশে। রবীন্দ্র সরোবর এর আয়তনই প্রায় ৭৩ একর। এই হ্রদের চারপাশে রয়েছে প্রায় পঞ্চাশটি ভিন্ন প্রজাতির গাছ। এছাড়াও হ্রদটির অন্যতম আকর্ষণ হল পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা। হ্রদের জলে রয়েছে নানা প্রজাতির মাছ।

১৯৩৫ সালে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সংগঠন নিপ্পনজান ম্যোয়োহোজি প্রতিষ্ঠাতা নিচিদাৎসু ফুজি সরোবরের দক্ষিণাংশে প্রতিষ্ঠা করেন কলকাতার একমাত্র জাপানী বুদ্ধ মন্দিরের। এছাড়া হ্রদের মধ্যভাগে একটি দ্বীপে রয়েছে একটি মসজিদ। একটি কাঠের সেতু দাঁড়া এটি যুক্ত। হ্রদ খননের সময় মিলেছিল কামানগুলিকে। সম্ভবত নবাব সিরাজদৌল্লার সময়ের কামান এইগুলি। ১৯৮৫ সাল থেকে ৮৯ সাল পর্যন্ত এখানে একটি শিশুদের টয় ট্রেনও চলত বলে শোনা যায়। কোথাও কোথাও হ্রদের ধারে এখনও রয়ে গেছে।

দুঃখের কথা এই যে বাকি সমস্ত জলাশয়ের মতো রবীন্দ্র সরোবরও পরিবেশ দূষণের শিকার। সরকার থেকে বহু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এই হ্রদ রক্ষায়। ভারত সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রক এই রবিন্দ্র সরোবর কে জাতীয় হ্রদ পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

Related posts

আবারও কিছুটা স্বস্তি মিলল দৈনিক করোনা সংক্রমনে, সুস্থ হচ্ছে দেশ

News Desk

১৫ই আগস্ট কি ২৬শে জানুয়ারি, পরদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে পতাকা কুড়িয়ে সযত্নে রাখেন এই যুবক

News Desk

দ্বিতীয় বিয়ের জন্য স্ত্রী-সন্তানকে নির্মম ভাবে খুন করেছিলেন! ৩৮ বছর পর সাজা শোনালো আদালত

News Desk