বতর্মান সময়ে দূষণ, সঠিক খাওয়া দাওয়ার অভাব আর জীবনযাত্রা পাল্টে যাওয়ার কারনে মহিলাদের লম্বা, কালো, ঘন চুল সেইভাবে দেখা যায় না। আধুনিক জীবনযাত্রার সাথে মানাতে তাই সকলে খুব বেশি হলে কাধ অবধি চুলেই অভ্যস্ত। সময় কোথায় চুল পরিচর্যার। কিন্তু এই সময়ে দাড়িয়েও চীনের এই গ্রামে সব মহিলাদেরই মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঘন কালো আর লম্বা চুল (longest hair village)। এখানে কোনও মহিলাই চুল কাটেন না। তাদের চুলের স্বাস্থ্য অসম্ভব ভালো। বয়স যাই হোক না কেন পাক ধরে না চুলে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত লম্বা কুচকুচে কালো চুলের অধিকারী তারা।
এই গ্রামটি চিনের (China) হুয়ানগ্লু প্রদেশে। ওই গ্রামে বর্তমানে মোট ৮২টি সংসারের বাস, রয়েছেন ৪০০ গ্রামবাসী। সেখানকার অধিবাসীরা বিশ্বাস করেন, লম্বা চুল সৌভাগ্য, অর্থ এবং দীর্ঘায়ু নিয়ে আসে। এই গ্রামে কোনো মেয়ে জন্ম নিলে তারা শুরু থেকেই চুল রাখতে শুরু করেন। মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হলে চুল কাটার উপর আছে নিষেধাজ্ঞা। এই গ্রামের বাসিন্দাদের স্থির বিশ্বাস দীর্ঘ লম্বা চুল সৌভাগ্যের প্রতীক।
এমনকি গিনেস বুকেও নাম রয়েছে এই গ্রামের।
কিন্তু মাথা থেকে পা পর্যন্ত লম্বা, কালো চুল তাও প্রত্যেকেরই। রহস্যটা কি?
বলা হয় এই প্রদেশের মহিলারা নিজেদের চুল পরিচর্যায় ব্যাবহার করেন ভাতের ফ্যান। ভাতের ফ্যানে চুলে ধুয়েই তাদের লম্বা ও সুন্দর চুল থাকে অক্ষুন্ন। এমনকি রাসায়নিক কোনো কিছু বাবহার থেকে দূরে থাকেন তারা। তাই বয়স বাড়লেও চুলে পাক ধরে না। এখানের সব মহিলাদেরই চুল কালো। সাধারণত গড়ে এখানকার মহিলাদের চুল ৬.৮ ফুট বা ২.১ মিটার পর্যন্ত লম্বা দেখা যায়।
হুয়ানগ্লু প্রদেশের মহিলারা ১৯৮০ সালের আগে খোলা চুল দেখাতেন না কোনও বিদেশী বা অপরিচিত ব্যক্তির কাছে। খোলা চুল দেখতে পেতেন একমাত্র স্বামী, সন্তান ও বাড়ির সদস্যরাই । প্রথা এটাই ছিল। খোলা চুল যদি বাইরের লোক বা কোনও বিদেশী পর্যটক ভুলবশতও দেখে ফেলেন, তাহলে আগামী তিন বছরের জন্যে মহিলার বাড়িতে জামাই হয়ে থাকতে হবে সেই ব্যক্তিকে। এই পন্থা পুরনো সময় থেকেই ব্যবহার করছেন পূর্বের রাজপরিবারের সদস্যরা।
কিন্তু এখন খোলা চুল প্রদর্শন করে পর্যটকদের থেকে অর্থ উপার্যন করেন এই প্রদেশের মহিলারা। এরফলে এখানে প্রচুর পর্যটক ভীড় জমান মাথা থেকে পা পর্যন্ত চুল দেখতে। এই কারণেই আর একটি নাম লঙ্গেস্ট হেয়ার ভিলেজ এই গ্রামের।