বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় গেলে সবার আগে যে সমস্ত জায়গায় আমরা যেতে চাই সেগুলির মধ্যে ঢাকার রমনা কালী মন্দির অন্যতম এক দর্শনীয় স্থান। বলা হয়ে থাকে যে এই মন্দিরটি ভারতের যত মন্দির ছিল তাঁর মধ্যে অন্যতম ছিল। ঢাকায় এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। এই মন্দির ঘিরে প্রায় হাজার বছরের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। কিন্তু জানেন সব থেকে কষ্টের ব্যাপার হল এই মন্দিরটিকে পাকবাহিনী ১৯৭১ সালে গণহত্যার সাথে ডিনাইমাইট দিয়ে ধ্বংস করে দেয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই মন্দিরের সেই ইতিহাস।
বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত এই মন্দির কবে তৈরী হয়েছিল?
ঢাকার এই রমনা কালী মন্দির কবে কে যে আসলে তৈরী করেছিল তা বলা খুব মুশকিল। ব্রিটিশ আমলে এই মন্দির নতুন করে প্রচারে আসে, এই মন্দিরটি আবার সেই সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। মন্দিরের নামকরণ স্থানীয় অঞ্চলের নাম থেকেই। ঢাকার সরকারি আরকাইভ থেকে যা জানা যায় যে কালী দেবীর নেপাল থেকে আসা জনৈক ভক্ত মন্দিরটি নির্মাণ করেন। পরে এটি সংস্কার করেন ভাওয়ালের রানি বিলাসমণি দেবী।
বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে ইতিহাস:
বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাসও জড়িয়ে এই মন্দিরের সাথে। সেইটা যুদ্ধের সময় অনেক ক্ষতি হয়ে যায় মন্দিরটির। এককালে এই মন্দিরের চুড়ো একশো কুড়ি ফুট উচ্চতা ছিলো বলে শোনা যায় যা বহু দূর থেকে দেখা যেত।। এই স্থাপত্য যুদ্ধের সময় অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য কালা দিবস ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ দিনটি। পাক বাহিনী রমনা কালী মন্দিরকে ২৬ মার্চ গভীর রাতে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। সেখানে উপস্থিত রমনা কালীমন্দিরের অধ্যক্ষ স্বামী পরমানন্দ গিরি-সহ প্রায় ১০০(মতান্তরে ৫০০) জন নারী ও পুরুষকে পাক সেনা নির্মম ভাবে হত্যা করেছিল। রেহাই পায়নি শিশুরাও। রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম দাউ দাউ করে জ্বলছিল এই হত্যাকাণ্ডের সময়। অবশ্য ভক্তদের চেষ্টায় ও বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় পরবর্তীতে মন্দির সংস্কার করে তার হৃত গৌরব ফিরিয়ে দেওয়া হয়।