ভাগ্যের পরিহাসে হয়ে যাবে সন্তানের ক্ষতি। অমঙ্গল সংসারের। এতোটাই নাকি ঐশ্বরিক ক্ষমতা জ্যোতিষীর। এসব নানান বুজরুকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে এক গৃহবধূর খোলামেলা ছবি চান জ্যোতিষী। তারপর থেকেই শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। দাবী করা হয় টাকা। এই অবধিই থেমে না থেকে দেওয়া হয় নানা কুপ্রস্তাব। অভিযোগ এই সমস্ত প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়াতে চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হলে পরিবারকে। পরিবারের গৃহবধূর সেই সমস্ত গোপনীয় ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমন অভিযোগেই গ্রেপ্তার হল এক জ্যোতিষী।
বৃহস্পতিবার রাতে সেই জ্যোতিষীকে গ্রেপ্তার করেছে পুরুলিয়া সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। শুক্রবার পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয় তাকে। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, অভিযুক্ত জ্যোতিষীর নাম মনসারাম প্রামাণিক। তিনি কেন্দা থানার রঘুডি গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, এই জ্যোতিষী ওই এলাকায় ওঝা, ঝাড়ফুঁক ইত্যাদি নানান কাজে লিপ্ত ছিল। এলাকার মানুষের কাছে প্রচার করতেন তার কাছে আছে মন্ত্র বল। এর দ্বারা তিনি নাকি সক্ষম মানুষের মনস্কামনা পূরণ করতে। এইসব বলে স্থানীয় মানুষের কাছে বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। তার কাছে আসা বিশ্বাসী মানুষের কাছ থেকে নানা বুজরুকি করে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।
জানা গেছে, পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানা অঞ্চলের এক গৃহবধূও নিজের কিছু সমস্যায় পরে বছর তিনেক আগে তাঁর স্বামীকে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই জ্যোতিষীর কাছে। সেই সূত্রেই ওই জ্যোতিষী বধূর ফোন নম্বর নিয়েছিলেন। তারপর এক বছর আগে ওই বধূকে ও সংসারের আর সন্তানের ক্ষতি হবে ভয় দেখিয়ে তাঁর খোলামেলা ছবি পাঠাতে চাপ দেন জ্যোতিষী। আর তারপর থেকেই সেই ছবি ঘিরে চলে ব্ল্যাকমেল। প্রায় ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন সাথে দেন আরো কুপ্রস্তাবও। কিন্তু সেই টাকা দিতে চাননি মহিলা। কুপ্রস্তাবেও আমল দেননি। আর তাতেই ক্ষুদ্ধ হন জ্যোতিষী। গৃহবধূর গোপনীয় ছবি দিয়ে দেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। অবশ্য ধরা পড়ার পর জ্যোতিষী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেম।
এদিন পুরুলিয়া আদালতে জ্যোতিষী জানান, তিনি কোনও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেননি। কোনও জ্যোতিষ সম্পর্কিত পেশার সাথে যুক্ত না, চাষাবাদ করে সংসার চলে। সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তবেই ওই জ্যোতিষীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। জ্যোতিষীর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।