ভারতের উপকূলবর্তী অনেক শহরে বড়সড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা ঘনাচ্ছে। বহু মানুষ ভিটেমাটি হারা হবে। বহু নগরী জলের তলায় চলে যাবে এমনটাই সতর্কবার্তা দিল নাসা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে যে, দেশের মুম্বই, চেন্নাই, কোচি এবং বিশাখাপত্তনম-সহ ১২ উপকূলীয় শহর তিন ফুট জলের তলায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এই শতকের শেষে।
সমুদ্রের জলস্তরের বিশ্ব জুড়ে কী পরিবর্তন হচ্ছে তা নিয়ে ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)-র রিপোর্টকে ব্যাখ্যা করেছে নাসা। নাসা দেশের ১২টি এমন শহরকে চিহ্নিত করেছে যেখানে প্রবল আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন এবং সমুদ্রের জলস্তর বাড়ার।
প্রতি ৫-৭ বছর অন্তর পৃথিবীর আবহাওয়া সংক্রান্ত কী কী পরিবর্তন ঘটছে তার উপর নজরদারি চালায় এই সংস্থা ১৯৮৮ সাল থেকে। বিশেষ করে উষ্ণতার পরিবর্তন, বরফের আচ্ছাদন, গ্রিনহাউস গ্যাস এবং সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির মতো বিষযগুলির উপর। উপগ্রহ চিত্র এবং নানা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে সমুদ্রের জলস্তর সম্পর্কিত তথ্য আইপিসিসি সংগ্রহ করে।
আইপিসিসি-র রিপোর্ট বলছে, সমুদ্রের জলস্তরের গড় বৃদ্ধির তুলনায় এশিয়া মহাদেশে সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত হারে বাড়ছে গোটা বিশ্বে। যেখানে ১০০ বছরে জলস্তরের যে পরিবর্তন দেখা যেত আগে, প্রতি ৬-৯ বছরের মধ্যে এক বার সেই পরিবর্তন দেখা দিতে পারে সেখানে ২০৫০-এর মধ্যে।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সমুদ্রের জলস্তর বাড়বে উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে একবিংশ শতাব্দী জুড়ে। ফলে এলাকাগুলি ঘন ঘন প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে উপকূলবর্তী নিচু। শুধু তাই নয়, জলস্তর বৃদ্ধির ফলে ভাঙনের শিকার হবে উপকূল অঞ্চলগুলি।
আবহাওয়ার পরিবর্তন আঞ্চলিক ভাবেও নানা পরিবর্তন ঘটাতে পারে। কোথাও বেশি হতে পারে বৃষ্টি, আবার খরার প্রকোপ দেখা দিতে পারে কোনও অঞ্চলে, কোথাও আবার বাড়তে পারে তুষারপাতের মাত্রা। এমন নানা পরিবর্তন লক্ষ করা যেতে পারে। সমুদ্রের জলস্তর নিয়ে যে সমীক্ষা করা হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে ২০০৬-১৮ সালের মধ্যে, প্রতি বছর জলস্তরের গড় বৃদ্ধি হয়েছে ৩.৭ মিলিমিটার গোটা বিশ্বে।
