দেবী দুর্গার আরেক নাম দশভূজা। তাঁর দশ হাতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র। নানা অস্ত্রে সজ্জিতা দেবী অশুভকে সংহার করতে মর্ত্যে আসেন। কখনও ভেবে দেখেছেন দুর্গার হাতের এই অস্ত্রগুলি কী তাত্পর্য বহন করে?
চক্র
দেবীর হাতে বিভিন্ন অস্ত্রের সঙ্গে শোভা পায় চক্র। শ্রীবিষ্ণু মহিষাসুরকে বধ করার জন্য নিজের চক্র থেকে এই চক্রটি সৃষ্টি করে দুর্গাকে দান করেন। মায়ের হাতের এই অস্ত্র দৃঢ়তা এবং সংহতির প্রতীক। দেবী দুর্গার হাতে চক্র থাকার অর্থ ,সমস্ত সৃষ্টির কেন্দ্রে অবস্থান করছেন দেবী।
ত্রিশূল
পার্বতীকে ত্রিশূল দান করেছিলেন স্বয়ং মহাদেব। কথিত আছে, ত্রিশূলের তিনটি ফলার আলাদা আলাদা ব্যাখ্যা আছে। মানুষ তিনটি গুণ, সত্য, তমঃ, রজঃ -র প্রতীক ত্রিশূলের তিন ফলা। এই ত্রিশূল দিয়েই মহিষাসুরকে বধ করেন তিনি।
শঙ্খ
বরুণ দেব মহামায়াকে দিয়েছিলেন শঙ্খ। যার ধ্বনি মঙ্গলময়। শঙ্খের আওয়াজে স্বর্গ, মর্ত্য ও নরক জুড়ে থাকা সব অশুভ শক্তি ভীত ও দুর্বল হয়ে পড়ে।
বজ্র
দেবীর হাতে বজ্র তুলে দিয়েছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র। নিজের বজ্রের থেকে আরও একটি বজ্র সৃষ্টি করে তা মহামায়াকে দেন তিনি। মা দুর্গার হাতের অশনি দৃঢ়তা এবং সংহতির প্রতীক। এই দুই গুণের মাধ্যমেই জীবনে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হন মানুষ।
গদা
যমরাজ দেবী দুর্গাকে দিয়েছিলেন দিয়েছিলেন গদা ৷ যা কালদণ্ড নামেও পরিচিত। এই অস্ত্র আনুগত্য, ভালবাসা এবং ভক্তির প্রতীক। সেই সঙ্গে শক্তিরও প্রতীক। দশভূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হল গদা।
তীর ধনুক
পবন দেব দুর্গাকে দেন তীর ধনুক। উভয়ই ইতিবাচক শক্তির প্রতীক। অসুরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় এই তীর ধনুক ব্যবহার করেন ভবানী।
তলোয়ার
তলোয়ার হল মানুষের বুদ্ধির প্রতীক৷ যার জোরে সমস্ত বৈষম্য এবং অন্ধকারকে ভেদ করা যায়৷ বুদ্ধির ধারের প্রতীক এই তলোয়ার। এই ধার দিয়েই যাতে সমাজের সমস্ত বৈষম্য ও অশুভকে বিনাশ করা যায়, সেই বার্তাই বহন করেন মা দুর্গার হাতের খড়্গ বা তলোয়ার।
ঘণ্টা
বিভিন্ন অস্ত্রের সঙ্গে দেবীর হাতে থাকে ঘণ্টা। পুরাণে কথিত আছে, দেবরাজ ইন্দ্রের বাহন ঐরাবত দুর্গাকে এই ঘণ্টা দিয়েছিলেন। ঘণ্টা ধ্বনি অসুরদের তেজকে দুর্বল করে।
পদ্ম
দশভূজা দেবীর হাতে ব্রহ্মা তুলে দেন পদ্ম৷ পদ্ম পাঁকে জন্মালেও কলঙ্কহীন। দেবীর আশীর্বাদে অন্ধকার কেটে আলোর সঞ্চার হয়। শুভশক্তির বার্তা নিয়ে আসে পদ্মফুল।
সাপ
শেষনাগ দেবী দুর্গাকে দিয়েছিলেন নাগপাশ৷ শুদ্ধ চেতনার প্রতীক হল এই সাপ।