লকডাউনের (Lockdown) চলাকালীন আলাপ হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরপর সেই আলাপই আস্তে আস্তে পরিণত হয় বন্ধুত্বে। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। অনলাইনে এক গানের অ্যাপে সুরে সুর মিলিয়েই বেড়ে চলে প্রেম যুগলের। তখনও অবধি দেখা হয়নি তাদের অবশ্য। কিন্তু তাতে প্রেমে কোনো খামতি আসেনি। প্রায় একবছর ধরে অনলাইন মাধ্যমের ভরসাতেই প্রেম করেছেন তারা। দেখা হওয়ার সুযোগ হয়নি। আর এই ভাবে ডিজিটালি এক বছর প্রেম করার পর উভয়ে সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ে করে ফেলার। যেমন ভাবা তেমনি কাজ। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে দেখা করেন দুজনে। দেখা করেই কালীঘাটে বিয়ে করে নেন উভয়ে। কলকাতার পার্ক সার্কাসে পাতেন নিজেদের সংসার। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। প্রায় কোন উপন্যাসের মতন চলছিল তাদের প্রেম কাহিনী। কিন্তু তাল কাটলো ৬ মাস যেতে না যেতেই। বিয়ের ছয় মাস পরে হঠাৎই একদিন নিখোঁজ হয়ে গেলেন স্বামী।
নিরুদ্দেশ স্বামী সুভাষচন্দ্র দাস কে ফিরে পেতে তাই তপসিয়া (Topsia) থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন স্ত্রী পিঙ্কি সাহা। পিঙ্কি সাহার তরফে অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। ওই ব্যক্তির মোবাইল ট্রেস করে পুলিশ। তদন্তে দেখা যায় তার মোবাইল এর শেষ লোকেশন দেখাচ্ছে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি থেকে গয়েরকাটার মাঝে। খবর পেয়েই ধূপগুড়িতে পৌঁছন পিঙ্কি। সেখানে স্বামীর ছবি সহ ছাপানো পোস্টার নিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। বাংলায় মাস্টারাস ডিগ্রী আছে বিধাননগরের বাসিন্দা পিঙ্কি সাহার। করেছেন বিএড ও। কিন্তু কিছুতেই এটা মেনে নিতে পারছেন না, যে তার স্বামী বিয়ের ছয় মাসের মাথায় তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারেন। এক বছরের অনলাইন মাধ্যমে জমে ওঠা প্রেমের প্রতি বিশ্বাস তাঁর পাহাড় সমান। আর তাই রাস্তায় রাস্তায় খুজেঁ বেড়াচ্ছেন নিজের স্বামীকে। স্বামীর ছবি হাতে নিয়ে দাদার সাথে পথে ঘাটে লোকজনকে জিজ্ঞেস করছেন কেউ তাঁর স্বামী সুভাষ চন্দ্র দাস কে দেখেছেন কিনা।
স্বামী সুভাষচন্দ্র দাসের সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ পিঙ্কির। আলাপের পর একটি অনলাইন গানের অ্যাপের মাধ্যমে আরও বাড়ে যোগাযোগ। গানের সুরে জীবনের ছন্দ খুজেঁ নেন তাঁরা। তারপরেই বিয়ে করেন। আর বিয়ের ছয় মাস পার হতেই এই ঘটনা। নিখোঁজ স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে তাই ধুপগুড়ির পথে পথে হন্যে হয়ে ঘুরছেন ওই মহিলা ও তাঁর দাদা।