সেলফোন বা মোবাইল ফোন পুরনো হয়ে গেলে বা ব্যাবহার করার উপযোগী না থাকলে আমরা অনেকেই সেগুলি ফেলে দিই বা অন্যান্য পুরনো ভাঙ্গাচোরা জিনিসের সাথে কেজি দরে বিক্রী করে দেই। কিন্তু আপনি কি জানেন আপনার পুরনো ফোনের ভেতরে লুকিয়ে আছে একেবারে খাঁটি সোনা। তাই এরপর থেকে ফেলে দেওয়ার আগে জানবেন আপনার মোবাইল ফোনের মধ্যে সোনা আছে। আর শুধু যে সোনা আছে তাই নয়। সোনা, রুপো, তামা ইত্যাদি নানা দামী ধাতু ব্যাবহৃত হয় মোবাইল ফোন তৈরির ক্ষেত্রে। এর কিছু কারণ আছে।
সোনা ব্যাবহার করার অন্যতম কারণ হচ্ছে এতে ক্ষয় হয়না অথবা মরিচা পড়েনা। সাথে সোনা আর বাকি দামি ধাতু বিদ্যুতের সুপরিবাহী। সোনার কানেকটরগুলি মোবাইলের ভেতরে ডিজিটাল ডাটা দ্রুত এবং সঠিকভাবে স্থানান্তরিত করার জন্যও ব্যবহৃত হয়। তাই ভীষন অল্প পরিমাণে হলেও মোবাইলের ভেতরের ইন্টিগ্রেটেড সারকিট (Integrated Circuit) বা আইসি (IC) বোর্ডের ছোট্ট কানেক্টারগুলিতে ব্যবহৃত হয় সোনা বা রুপোর মত দামি ধাতু।
যদিও একথা সত্যি যে, একটি মোবাইলের ভেতরে স্বল্প পরিমাণ সোনা থাকে। একটি মোবাইল থেকে পাওয়া যায় ৫০ মিলিগ্রাম মত সোনা। একটি মোবাইলের থেকে প্রাপ্ত সোনার মূল্য থাকে মাত্র তিরিশ অথবা পঁয়ত্রিশ টাকা। কিন্তু প্রতিদিন ভারতে বা সারা পৃথিবীতে যত পরিমাণ পুরনো মোবাইল বাতিল করা হয় তাতে ভর করে চলে কোটি কোটি টাকার ব্যাবসা। সেখানে টন টন ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য থেকে কোটি টাকার সোনা পাওয়া যায়। একটি হিসেবের নিরিখে জানা যায়, ৪১টি পুরনো মোবাইল ফোন থেকেই ১ গ্রাম সোনা পাওয়া যায়। ভারতের টাকার হিসাবে এখন এই পরিমাণ সোনার গড় মুল্য সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। এই হিসাব করলেই দেখা গিয়েছে, সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর বাতিল করে দেওয়া মোবাইল ফোন থেকে পাওয়া যায় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার সোনা।
মোবাইল ফোনের মতো, কম্পিউটার ও ল্যাপটপ নির্মাণেও কাজে লাগে সোনা। সেই ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের আইসিগুলিতেও ব্যবহৃত হয় সোনা। আর এই ভাবেই প্রতিবছর বাতিল হয়ে যাওয়া মোবাইল, ল্যাপটপ ইত্যাদি দিয়ে চলে মোটা অঙ্কের টাকার কারবার।