দক্ষিণ আফ্রিকায় সদ্য শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ (Covid-19) এর নতুন প্রজাতি ওমিক্রন আর পুরনো প্রজাতি ডেল্টা এই দুইয়ের সারাশি চাপে ত্রস্ত বর্তমান বিশ্ব। তারই ভেতর খোঁজ মিলল আরেক নতুন ভাইরাস সংক্রমণের। বৃহস্পতিবার আরব নিউজ জানিয়েছে এই বিষয়ে। ইজরায়েলে ‘ফ্লোরোনা’ (Florona) নামক একটি নতুন ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। এই ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। কোভিড -১৯ ও ইনফ্লুয়েঞ্জার দ্বৈত সংক্রমণের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে সেই ব্যক্তি। এক প্রেগন্যান্ট তরুণীর শরীরে ধরা পড়েছে এই ডবল ভাইরাসের সংক্রমণ। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ও করোনাভাইরাস। একসাথে যাকে ডাকা হচ্ছে ফ্লোরোনা।
আরব নিউজ টুইটারে জানিয়েছে ইসরায়েলে ফ্লোরোনা রোগের প্রথম রোগী পাওয়া গেছে। অপরদিকে ইসরায়েলের জাতীয় স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছে শুক্রবার থেকে তাঁরা তাঁদের দেশে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে চতুর্থ টিকা দেওয়ার কর্মসূচি শুরু করেছে।
ইসরায়েলের জাতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিচালক নাচম্যান অ্যাশ জানিয়েছেন ওমিক্রন সংক্রমণের ঢেউয়ের কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের বুস্টারডোজ দেওয়া হবে। তৃতীয় ডোজ থেকে মাত্র চার মাসের ব্যবধানে চতুর্থ ডোজ দেওয়া হবে।
এই সপ্তাহের শুরুতেই এক ইজরায়েলিও অন্ত: সত্ত্বা মহিলা ফ্লোরোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানকার স্থানীয় দৈনিকে দাবি করেছে যে কোনও রকম টিকা নেননি ওই মহিলা। ইজ়রায়েলি চিকিৎসকদের মতে , এ দেশে গত কয়েক সপ্তাহে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বেড়েছে। এই তরুণীর একটু অন্য রকম উপসর্গ দেখা যায় এর মধ্যে। পরীক্ষা করতে দেখা যায়, দু’টি ভাইরাসই তাঁর শরীরে উপস্থিত। নাহলা আব্দেল ওয়াহাব কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, ফ্লোরোনা হওয়া থেকে বোঝা যাচ্ছে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেম কোনও ব্যক্তির কতটা দুর্বল হয়ে গেলে তাঁর দু’টি ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে একই সঙ্গে।
ব্রিটেন-আমেরিকায়— ‘ডেলমিক্রন’ নামের নতুন আর একটি শব্দও ছড়াচ্ছে। একই সঙ্গে ডেল্টা স্ট্রেন ও ওমিক্রন স্ট্রেনের সংক্রমণ বৃদ্ধিকে কোনও অঞ্চলে ডেলমিক্রন বলা হচ্ছে । ( দু’টো স্ট্রেনে সংক্রমণ হচ্ছে না এক জনের) সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে দু’টো স্ট্রেনেই । অর্থাৎ যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল এত দিন, ক্রমশ ওমিক্রন ডেল্টাকে সরিয়ে মূল সংক্রামক স্ট্রেন বা ডমিন্যান্ট হয়ে উঠবে, তা হচ্ছে না। দু’টিই এক সঙ্গে মারণ খেল্ দেখিয়ে যাচ্ছে। অ্যান্টনি ফাউচিও আমেরিকান শীর্ষস্থানীয় এপিডিমিয়োলজিস্ট গত কাল বলেছেন, ওমিক্রনের বিপজ্জনক হারে ছড়িয়ে পড়া চিন্তা বাড়াচ্ছে ডেল্টা থাকতে থাকতেই। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যে সুনামি দেখা যাচ্ছে ইউরোপ ও আমেরিকায় সংক্রমণের, তার অন্যতম কারণ ডেলমিক্রন।