অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী প্রসব এর পর জন্ম দিয়েছেন পুত্র সন্তানের। এমনটাই খবর দিয়েছিলেন নার্স ওই মহিলার স্বামীকে। কিন্তু সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটিকে তাঁর বাবার হাতে তুলে দিতেই দেখলেন যে সে কন্যা সন্তান! গত শনিবার মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটে গেছে এই সন্তান বদলের ঘটনায়। এরপর ওই দম্পতি বহরমপুর থানায় এই ঘটনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। মেডিকেল কলেজের কতৃপক্ষ থেকে সম্পূর্ণ ঘটনার তদন্তের সাথে সাথে ওই সন্তান ও তাঁর বাবার ডি এন এ টেস্ট করানো হবে বলেও আশ্বাস দেন।
গত শুক্রবার নবগ্রাম থানার গোপগ্রাম ভিটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সীমা ঘোষকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। পরদিন এক সন্তানের জন্ম দেন তিনি। ওই মহিলা অর্থাৎ সীমা দেবীর স্বামী প্রতুল ঘোষ জানিয়েছেন যে , স্ত্রী প্রসব করার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত এক নার্স তাঁকে জানান যে তাঁর পুত্র সন্তান হয়েছে যদিও এই ফোনের কিছুক্ষন পর তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় সদ্যোজাতকে। এই ঘটনার বেশ খানিক পরে বিকেলের দিকে প্রতুল বাবু খেয়াল করেন যে তাঁর হাতে কন্যা সন্তান তুলে দেওয়া হয়েছে। এরপরই প্রতুল বাবু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনাটি জানাতে যান। প্রতুলের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট বিভাগে সন্তান বদলের কথা জানাতে গেলে তাঁকে উল্টে বলা হয়, পুত্র সন্তান নয়, এক কন্যার জন্ম দিয়েছেন সীমা।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম অবস্থার সৃষ্টি হয় ওই হাসপাতাল চত্বরে। হাসপাতালের সুপারের কাছে এবং বহরমপুর থানায় এর পরেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রতুল। তাঁর বয়ানে , ‘‘প্রথমে আমাদের বলা হয়েছিল, ছেলে হয়েছে। পরে আমার হাতে বাচ্চাকে পরিষ্কার করে তুলে দেওয়া হয়। প্যাম্পার পরানো ছিল তখন। আর তেমন খেয়াল করিনি তাই বুঝতেও পারিনি। কিন্তু সন্দেহ হয় বিকেলের দিকে। দেখি,সদ্যজাত শিশুটি ছেলে নয়, মেয়ে সন্তান। আমার সন্তান কে বা কারা বদল করল, তার তদন্ত চাই আমি।’’
ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে প্রতুলের অভিযোগের ভিত্তিতে বলে জানানো হয় পুলিশের তরফে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেশ গুরুত্ব দিয়ে এই ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছে। ভারপ্রাপ্ত এমএসভিপি সুপ্রতীক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সাথে সাথেই তদন্ত শুরু করেছি। তবে সবটা বলা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অনেকগুলো। তার মধ্যে ডিএনএ টেস্ট একটি। একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হবে। বাড়ির লোকের সাথে কথা বলেছি এবং জানিয়েছি যে একটা বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিই সম্পূর্ণ তদন্ত করছে। গাফিলতি কার বা কি করে হয়েছে , তা খতিয়ে দেখছি আমরা।’’