গত বছর পৃথিবী পরিচিত হই এমন একটি ভাইরাসের সাথে যা সারা পৃথিবীতে নিয়ে আসে অতিমারীর আতঙ্ক। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘরবন্দি থাকতেও হয় অনেকদিন। বাইরে বেরোলেও সর্বক্ষণের সঙ্গী মাস্ক হান্ড স্যানিটাইজার আর আতঙ্ক। অপেক্ষা ছিল কোনো ভ্যাকসিন আসবে কবে তার। ভাকসিন এসেও যায় চলতি বছরের শুরুতে। অপেক্ষাকৃত উন্নত দেশগুলি ভ্যাকসিন দেওয়ায় এগিয়ে গেলে তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলির মধ্যে এখনও রয়েছে ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতা।
যত ধরনের ভ্যাকসিন এর মধ্যে বাজারে এসেছে, সেগুলির বেশিরভাগেরই দুটি করে ডোজ। কোনও ভ্যাকসিনের মাত্র একটি ডোজই যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে। কোনো কোনো রাষ্ট্র আবার নিজেদের নাগরিকদের দুটি ভ্যাকসিনের পর আরেকটি বুস্টার শট বা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ দেওয়ার পথেও এগোচ্ছে। কিন্তু তাই বলে করোনা ভ্যাকসিনের ৫টি ডোজ। তাও আবার মাত্র ১০ সপ্তাহ ব্যবধানের অন্তরালেই। হ্যাঁ এমনই এক ঘটনা ঘটল ব্রাজিলে। ১০ সপ্তাহের ভেতরে পাঁচটি ভ্যাকসিনের ডোজ নিয়ে রীতিমতো সেই দেশের সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে চলে এসেছে ব্রাজিলের ওই ব্যক্তির নাম।
ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডে জেনেইরোর বাসিন্দা। শহরের স্বাস্থ্যদপ্তর ইতিমধ্যে তাঁর পরিচয় খোঁজও করে নিতে পেরেছেন। ব্রাজিলের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা খোঁজ খবরে নেমে জানতে পেরেছেন ২০২১ সালের ১২ মে থেকে ২১ জুলাই এর মধ্যেই নানা ধরনের করোনা ভ্যাকসিনের পাঁচটি ডোজ নিয়েছেন ওই ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, তিনি ফাইজার ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ, করোনাভ্যাকের দুটি ডোজ এবং অ্যাস্ট্রাজেনকার করোনা ভ্যাকসিনের একটি ডোজ নিয়েছেন। আর সব থেকে অবাক করা হল যে এই সব ভ্যাকসিনের ডোজের নাম তাঁর ভ্যাকসিনেশন কার্ডে লেখাও রয়েছে।
কিন্তু এমনটি কীভাবে সম্ভব হল? একজন মানুষ কী করে ভ্যাকসিনের পাঁচটি ডোজ নিয়ে নিতে পারে? এই প্রসঙ্গে রিও ডে জেনেইরোর মেয়রের অফিস সূত্রে সাফাই দেওয়া হয়েছে, ব্রাজিলের স্বাস্থ্যদপ্তরের তিনটি আলাদা আলাদা ভ্যাকসিনেশন সেন্টার থেকে নানান ধরনের করোনার ভ্যাকসিনের (Corona Vaccine) ডোজগুলি নিয়েছিলেন তিনি। জানা যাচ্ছে টেকনিক্যাল সিস্টেমের ত্রুটির জন্যই এই কাজ করতে পেরেছেন তিনি। শেষে নিজের করোনা টিকার ৬ তম ডোজ নিতে গিয়েই তার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। ১৬ই আগস্ট নিজের ষষ্ঠ করোনা টিকা নিতে একটি স্বাস্থ্যদপ্তরের সেন্টার -এ যান তিনি। আর সেখানে গিয়েই ধরা পড়ে যান। ঘটনার জানাজানি হতেই তদন্তও শুরু করেছে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে ভ্যাকসিন নিয়ে এমন বিভ্রাট শুধু ওই ব্যক্তির সঙ্গেই হয়েছে না কি আরও বহু মানুষের সঙ্গেই একই ঘটনা ঘটেছে।