বাংলাদেশের মুসলিম মহিলা রনি বেগম, ভারতে আত্মগোপন করার কারণে হিন্দু নাম রেখেছিলেন পায়েল ঘোষ। হিন্দু মহিলার ছদ্মবেশে কাটিয়ে দিয়েছিলেন গত ১৫ বছর। এই পরিচয়েই ভারতে আত্মগোপন করে ছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা। কিন্তু শেষ অবধি পুলিশের চোখে পড়তেই হলো। শেষরক্ষা হল না। বাবা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বাংলাদেশ ফেরার চেষ্টার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেন ২৭ বছরের যুবতী।
ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (FRRO) থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওই মহিলা কে গ্রেপ্তার করা হয়। সূত্র অনুযায়ী মাত্র ১২ বছর বয়সে চোরাপথে এই দেশে অনুপ্রবেশ করে রনি বেগম। তারপর থেকে এই দেশেই গুপ্ত পরিচয়ে বাস করেন সে। হিন্দু নাম রাখেন তিনি। লুকিয়ে রাখেন তার পরিচয়। একসময়ে মুম্বইয়ের ডান্স বারে নতর্কির পেশায় ছিলেন ওই মহিলা। তারপরে নীতিন কুমার নামেই ম্যাঙ্গালুরু নিবাসী এক ডেলিভারি-ম্যানকে বিয়ে করেন।
২০১৯ সাল থেকে বেঙ্গালুরুর অঞ্জনানগরে বসবাস করতেন স্বামীর সাথে। এর আগে মুম্বাই শহরে নাচের কাজে যুক্ত থাকার গুপ্ত পরিচয়ে বানিয়ে নিয়েছিল প্যান কার্ড। তারপরে বিয়ের পর তার স্বামী নীতিন বেঙ্গালুরুতে এক বন্ধুর সাহায্যে আধার কার্ডও বানিয়ে ফেলেন। একটি ব্যাগের কারখানায় কাজও করতেন রনি।
এত অবধি কারো কিছু সন্দেহ হয়নি। কিন্তু হঠাৎই রনি বেগম নামের ওই মহিলা বাংলাদেশে বসবাসকারী তার বাবার মৃত্যুর খবর পান। এরপরেই বাংলাদেশে তিনি যাওয়ার উদ্যোগ নেন। সেই অনুযায়ী মুম্বাইয়ের দপ্তরে ভিসার আবেদন করেন। অভিবাসন দপ্তরের আধিকারিকদের ওই মহিলার পাসপোর্ট দেখে কিছুটা সন্দেহ হয়। তাঁকে বাংলাদেশে যাওয়ার ভিসা তখন দেওয়া মুলতুবি রাখেন আধিকারিকরা। তারপর তদন্তের নির্দেশ দেন তাঁরা। প্রাথমিক তদন্তের পর অফিসাররা জানতে পারেন রনি চোরাপথে এই দেশে ঢুকেছিলেন। কিন্তু এই তদন্ত চলাকালীন রনি বেঙ্গালুরু ফিরে যান। বিষয়টি বেঙ্গালুরু পুলিশকে অবহিত করা হয়। তবে ততক্ষণে রনিও বুঝতে পেরে যান তার তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে পুলিশের কাছে। বুঝতে পেরেই ফেরার হয়ে যান তিনি। ওই মহিলার খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে কোন উপায়ে, কাদের সাহায্যে রনি ভারতে ঢুকেছিল চোরাপথে। এতগুলো বছর কিভাবেই বা আত্মগোপন করে ছিলেন? তাঁর পরিচয়পত্র কিভাবে করা বানিয়েছিল? সবটা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা।